শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে লাম্পী স্কীন রোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার (৮ মে) নয়াবিল ইউনিয়নের দাওয়াকুড়া গ্রামের কৃষক আবু সাইদের প্রায় ৩০ হাজার টাকা মুল্যের একটি বকনা বাছুর মারা গেছে। এর আগে গত বুধবার (৩ মে) একই রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই গ্রামের কৃষক আবদুল মতিনের প্রায় ৮০ হাজার টাকা মুল্যের একটি গাবিন গরু ও আন্ধারুপাড়া গ্রামের কৃষক মনিরুজ্জামান মানিকের প্রায় ৫০ হাজার টাকা মুল্যের একটি ষাঁড় বাছুর মারা যায়। দিনদিন এই রোগটি উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ায় আতংকে রয়েছেন এলাকার কৃষক ও খামারিরা। তারা এ রোগ প্রতিরোধে জরুরীভিত্ততে আক্রান্ত এলাকার গবাদিপশুদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের দাবি জানান।
সরেজমিনে জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে উপজেলার ভোক্তভোগী কৃষকরা তাদের গরুর শরীরে এই লাম্পী স্কীন রোগের দেখা পান। এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে গুটি বের হয়ে শরীর ফুলে যায় পচন ধরে ও রক্ত বের হয়। গরুর শরীরে জ্বর থাকে। গরু খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয়। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না নিলে গরু মারা যায়। বর্তমানে এই রোগটি আস্তে আস্তে উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বেশ কয়েকজন কৃষকের আক্রান্ত গরু মারা যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছেন তারা। তাই ওই এলাকার কৃষকরা এখন আতংকে রয়েছেন।
উপজেলার পোড়াগাঁও ইনিয়নের পলাশীকুড়া গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি কৃষাণী মরিয়ম বেগম জানান, তার খামারে ১১টি গরু আছে। এরমধ্যে দেড় বছর বয়সী একটি ষাড় বাছুর লাম্পী স্কীন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এখানো সুস্থ্য হয়ে ওঠেনি। এ পর্যন্ত তার প্রায় ৬ হাজার টাকা চিকিৎসা খরচ হয়েছে। এমতাবস্থায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।
এমন ক্ষুদ্র খামারি কৃষক আন্ধারুপাড়া গ্রামের লালচাঁন মিয়ার ৩টি ষাঁড় গরু আক্রান্ত হলে চিকিৎসায় একটি সুস্থ্য হয়েছে আর বাকি দুই ষাঁড় গরুর চিকিৎসা চলছে। এছাড়া ওই এলাকার কৃষক রুহুল আমীনের ১টি, মুনসুর আলীর ১টি ও পলাশীকুড়া গ্রামের কৃষাণী আম্বিয়া খাতুনের ১টি গরুর চিকিৎসা চলছে। তারা বলেন, এই লাম্পী স্কীন রোগ যাতে আর না ছড়ায় তার জন্য জরুরীভিত্তিতে আক্রান্ত এলাকার গবাদিপশুদেরকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা দরকার।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ফায়জুর রহমান বলেন, লাম্পী স্কীন ডিজিস মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই এই রোগে আক্রান্ত গবাদিপশুকে আলাদা করে মশারীর ভিতরে রাখতে হবে। পাশাপাশি আক্রান্ত হওয়ার আগেই সরকারি ভ্যাকসিন না পেলে নিজ উদ্যোগে বেসরকারি কোম্পানির ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে। তাহলে কৃষকের ক্ষতির সম্ভবনা কম।