ইমরান হাসান রাব্বী ও জাহিদুল হক মনির : প্রধানমন্ত্রীর দেয়া পাকা ঘরে প্রথম রাত কাটছে ভিক্ষুক নাজিমের পরিবারের। জরাজীর্ণ মাটির ঘর থেকে নতুন পাকা ঘরে পরিবার নিয়ে রাতের খাবার খেয়েছেন নাজিম উদ্দিন। নিজের বউয়ের হাতের রান্না খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুড় তুলেছেন তিনি। রাত দশটায় শেরপুর টাইমসকে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আজকে নিশ্চিন্তে খাওয়াইছে। আলহামদুলিল্লাহ!’
আজ রাতের খাবারে সাথে ছিলো তার স্ত্রী, মেয়ে তানজিনা ও ছেলে আব্দুল্লাহ। নাজিম উদ্দিন শেরপুর টাইমসকে বলেন, ‘পাগলীডা আইজকা দেশী চরই (মুরগী) রানছিল। সাথে কচুর লতা ভাজিও করছিল। খুব মজা কইরা নয়া ঘরে সবাই মিল্লা নিশ্চিন্তে খাইলাম।’ নাজিম উদ্দিন স্ত্রীকে আদর করে পাগলী বলে ডাকেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘খাওয়া শেষ কইরা নয়া দোহানডা দেখবার যামু। আইজ ব্যস্ততার লাইজ্ঞা বেচা বিক্রি করবার পাই নাই। কাইল থাইক্কা আল্লাহর রহমতে বেচা শুরু করুম।’
নাজিম উদ্দিন আরো বলেন, ‘নয়া অটো গাড়িডা চার্জে দেওন লাগবো। মেলাক্ষণ একটানা চার্জ দিবার কইছে নাঈম ভাই (ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান)।’
উল্লেখ্য আজ রবিবার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার “পাকা ঘরে” উঠেছেন ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন। ভিক্ষা করে ঘর মেরামতের জন্য জমানো ১০ হাজার টাকা করোনার দুঃসময়ে কর্মহীন মানুষের জন্য ত্রাণ তহবিলে দান করে প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসেন তিনি। গত ২১ এপ্রিল গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রচারের পর তার মহানুভবতায় খুশি হয়ে পাকা বাড়ি করে দেয়ার নির্দেশ দেন সরকার প্রধান। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও দেয়া হয় সম্মাননা, জীবিকার জন্য দেয়া হয়েছে দোকান। জীবদ্দশায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার ইচ্ছে ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিনের।
স্ত্রী ও ৬ ছেলে মেয়ে নিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে ভিক্ষা করে সংসার চালাতেন ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন। আজ জীর্ণ মাটির ঘর ছেড়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া পাকা ঘরে উঠেছেন তিনি। নতুন ঘরের চাবি তার হাতে তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব।