শেরপুর জেলার নকলা উপজেলাধীন একমাত্র শতবর্ষী চন্দ্রকোনা রাজলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয়ের সংবাদ সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগন। বিদ্যালয়টির শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠান উদ্বোধনের দিন (৩০ মার্চ শনিবার) মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। ফলে বিদ্যালয়টির শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে। তাই বিভিন্ন গনমাধ্যমের সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।
সাংবাদিক মো. মোশারফ হোসেন, শাহজাদা স্বপন, মাহবুবুর রহমান, শফিউল আলম লাভলু, রফিক মিয়া, জিয়াউল হক জুয়েল ও সুখনসহ অনেক সাংবাদিক জানান, চন্দ্রকোনা রাজলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয়টি উপজেলার একমাত্র শতবর্ষী বিদ্যালয় হওয়ায় এমনিতেই গুরুত্ব বহন করছে। তাছাড়া শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি উপস্থিত থাকার বিষয়টি সংবাদ সংগ্রহ করতে সকল সাংবাদিককে অনেকটা বাধ্য করে তুলেছে।
জানাগেছে, এ বিদ্যালয়টি নকলা উপজেলা শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত চন্দ্রকোনা বাজারের পশ্চিম পাশে ১৯১৯ সালে স্থাপিত হয়। ২০১৯ সালে এই বিদ্যালয়টি শতবর্ষী হয়ওয়ায় শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চ শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে। যদিও এর আগে ২৭ ও ২৮ মার্চে অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ নির্ধারন করে চিঠি বিলি করা হয়েছিল, কিন্তু ওই তারিখে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি দেশের বাহিরে অবস্থান করবেন বলে সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন। তাই শিক্ষা মন্ত্রীর সদয় সম্মতিক্রমে ওই তারিখ পরিবর্তন করে পুনরায় ৩০ ও ৩১ মার্চ নির্ধারন করেছেন শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন কমিটি ও সংশ্লিষ্টরা।
শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি ছাড়াও ওই অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ সাবেক কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তাছাড়া শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ও বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে আছেন এমন ওই বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন বলে শতবর্ষ উদযাপন পরিষদের অন্যতম সদস্য সফিকুল ইসলাম সুখনসহ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী জনতা ব্যাংকের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার মো. আক্রাম হোসাইনকে সভাপতি করে শতবর্ষ উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে গঠন করা হয়েছে বেশ কয়েকটি উপকমিটি।
তৎকালীন জামালপুর পৌরসভার জমিদার শ্রী গোপাল দাস চৌধুরী তাঁর বাবা গোবিন্দ কুমার (জি.কে) এর নামে শেরপুর শহরে ঐতিহ্যবাহী জি.কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং তাঁর মা রাজলক্ষ্মীর নামে নকলার চন্দ্রকোনায় রাজলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয় নামে ১৯১৯ সালে শিক্ষালয়টি প্রতিষ্ঠাতা করেন।
চন্দ্রকোনা রাজলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, দেশ বিদেশে এই বিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে শিক্ষকরা বছরে দুইবার সরকারি অনুদানের টাকা পেতেন। তবে ১৯৮৪ সাল থেকে শিক্ষকরা নিয়মিত সরকারি অনুদানের (এমপিও) টাকা পেয়ে আসছেন। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান সাজু সাঈদ সিদ্দিকী জানান, এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অত্যন্ত অভিজ্ঞ ও শিক্ষার্থী বান্ধব। তারা দক্ষতার সহিত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছেন বলেই ফলাফলে সেরা প্রতিষ্ঠানের স্থান দখল করে আছে।