শেরপুরের নকলায় লীজ কৃত জলমহালের মাছ হরিলুট করার অভিযোগে কয়েকটি মামলা হয়েছে। ইতি মধ্যে সোয়া লাখ টাকার মাছ ধরে নেওয়া সহ অর্ধ লাখ টাকার পোনা মাছ নিধন করার অভিযোগ এনে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাত নামা আরও ৬/৭ জনকে বিবাদী করে বড়বিলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির পক্ষে সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন চলতি মাসে নকলা থানায় এবং গত বছরের ২ মে তারিখে আদালতে ও ফৌজদারী কোর্টে আরও একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মাসেই ফৌজদারী মামলায় নকলা থানার পুলিশ অভিযুক্ত একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছিলো।
জানা গেছে, গত বছরের ২ মার্চ তারিখে খোলা টেন্ডার ডাকের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে উপজেলার কুর্শাবিল জলমহালটি ৩বছরের জন্য লীজ পায় বড়বিলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। কিন্তু ডাকে অপর অংশ গ্রহণ কারী নয়াবাড়ী মৎস্যজীবী সমিতির পক্ষে মোঃ চাঁন মিয়া ওই কুর্শাবিল জলমহাল ইজারার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আপিল করায় ইজারার বক্রী টাকা সরকারী কোষাগারে জমা করতে বাধার সৃষ্টি হয়। কিন্তু ইজারার বিরুদ্ধে আপিল অযৌক্তিক বিধায় ৬ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে বিভাগীয় সহকারী কমিশনার (রাজস্ব) নূসরাত জাহান তা না-মঞ্জুর করে দিয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন। আনোয়ার অনুলিপি হাতে পেয়ে ইজারা মূল্য, ভ্যাট ও আয়কর বাবদ মোট ৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সরকারী চালানের মাধ্যমে যথাযথ খাতে ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল জমা করেন। ২১ এপ্রিল জেলা প্রশাসক ডাঃ এ এম পারভেজ রহিম নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তাদের ৩দিনের মধ্যে ইজারাদার বরাবর দখল বুঝিয়ে দিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তাদের প্রতিনিধি দল ২৪ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে কুর্শাবিল জলমহালটি বড়বিলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে দখল প্রদান করেন। এই ফাঁকে বিবাদীগন বিধি মোতাবেক ভূমি আপীল কোর্টে আপীল না করে সরাসরি মহামান্য হাইকোর্টে ৪৯৮১/২০১৬ নং রীট পিটিশন দায়ের করেন। যা ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে শুনানীয়ন্তে মহামান্য হাইকোর্ট সেটাও ডিসমিস করে দেন। কিন্তু থামছেনা অবৈধ ভাবে মাছ ধরা।
এবিষয়ে বড়বিলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, গতবছর বৈধ ভাবে জলমহাল ইজারা নিয়ে মাছ ছেড়েছিলাম, কিন্তু কোন এক ঐশ্বরিক শক্তির প্রভাবে আমাদের মতো দরিদ্র জেলেদের পেটে লাথি মারা হচ্ছে। নিধন করা হচ্ছে পোনা মাছ, ধরে নিয়ে যাচ্ছে অপেক্ষাকৃত বড় মাছ গুলো। কোন কিছু বলতে গেলেই নানা ভাবে হুমকী দামকী দেওয়া হয় তারা। নয়াবাড়ী মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মোঃ চাঁন মিয়াকে পাওয়া না গেলেও নয়াবাড়ী মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য তাহাজ্জল ও আইজুল বলেন, “কুর্শাবিল জলমহালটি আনোয়ার ভাই লীজ নিছে। তাতে আঙ্গরেই উপকার অইছে। কিন্তুক চাঁন মিয়ার দলের লোকেরা আঙ্গরে সমিতির নাম ভাঙ্গাইয়া অয়রানী করবার নাইঙ্গা নানান জাগাত অভিযোগ দিছে। অন্যায় ভাবে চাষকরা মাছ ধইরা নিতাছেগা। এতে আঙ্গরে খুব ক্ষতি অইতাছে, বউ বাচ্চা নিয়া খুব কষ্টে জীবন কাডাইতাছি।” এমতাবস্থায় জেলেদের জীবনমান চিন্তা করে এই সমস্যা সমাধানে পুলিশ প্রশাসন সহ স্থানীয় প্রশাসনের আরও কঠিন হয়ে অতিজরুরি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।