শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বন্দটেকি গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বানিজ্যিক ভাবে লটকন (বুবি) চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ভিটামিন সি, ডি ও কার্বোহাইট্রেড যুক্ত মুখরোচক, টক মিষ্টি সংমিশ্রিত লটকন ফল যার স্থানীয় নাম বুবি। গত তিন বছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিপুল সংখ্যক চাষী এ ফল চাষ করে লাভবান হওয়ায় এবছর এর ব্যাপক আবাদ হয়েছে।
অতীতে ঝুপ জংলা বা বাড়ির আঙ্গিনায় প্রাকৃতিক উপায়ের দু-একটি লটকন গাছের সন্ধান পাওয়া যেত, কালে ভদ্রে লটকন গাছ যখন বিলুপ্তির পথে তখন কতিপয় চাষী বানিজ্যিকভাবে লটকন চাষ করে আর্থিক সফলতা অর্জন করছেন। এবছর চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বন্দটেকি গ্রামের শরিফুল ইসলাম, মুনছেব আলী, খোকন মিয়া, নকলা পৌরসভার মুছারচর এলাকার সাইদুল ইসলাম, আক্কাছ আলী, ইন্তাজ মিয়া ও আব্দুল হাইসহ শতাধিক কৃষক লটকন চাষ করেছেন।
নকলা উপজেলার বন্টটেকি গ্রামের শরিফুল ইসলাম পরীক্ষামুলক ভাবে ২০০২ সালে ৭০ শতাংশ জমিতে ১২০টি চারা রোপনের মাধ্যমে লটকন চাষ শুরু করেন। তিন-চার বছর পর এসব গাছে ফলন আসে। তিনি প্রতি বছর বাগানের লটকন পাইকারী বিক্রি করেছেন। ২০১৮ সনে তার বাগান থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকার লটকন বিক্রি হয়েছে বলে তিনি জানান। এবছরও তিনি প্রায় ৩লক্ষ টাকার লটকন বিক্রি হবে বলে তিনি আশার করছেন।
লাভজনক এ ফলটি চাষ করেতে জমি তৈরি, চারা ক্রয়, রোপন ও সামান্য জৈব সার ব্যবহার ছাড়া আর কোন খরচ নেই। বিনা খরচে এধরনের লাভজনক চাষে এলাকাবাসী আগ্রহ বাড়ছে। নকলা উপজেলায় উৎপাদিত লটকন ফল স্থানীয় বাজার ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জামালপুর, ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন শহর ও রাজধানী ঢাকাতেও বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, আমি বন্দটেকি গ্রামের শরিফকুল ইসলামসহ কয়েকজন কৃষকের লটকনের বাগানগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এসব বাগানে লটকনের ফলন আশানোরুপ। ফলে উপজেলার গনপদ্দী, বানেশ্বরদী, টালকী, চন্দ্রকোণা ও নকলা, গৌড়দ্বার, পাঠাকাটা, চরঅষ্টধর ইউনিয়ন, নকলা পৌরসভার ধুকুড়িয়া, লাভা, গড়েরগাঁও, জালালপুর ও কায়দা এলাকার জমি অপেক্ষাকৃত উঁচু এবং দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ হওয়ায় ওইসব এলাকা লটকন ফল চাষ করে কৃষকরা উপকৃত হতে পারেন বলে আমি ধারনা করছি।