শেরপুরের নকলা পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্থানীয় বহুল আলোচিত প্রভাবশালী রূপালী বেগমকে (৪০) হামলা-ভাংচুর, মারপিট ও চাঁদাবাজীর চাঞ্চল্যকর এক মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে আদালতে ওই মামলার ১১ আসামি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে উভয় পক্ষের দীর্ঘ শুনানী শেষে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম খান অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় ৮ জনকে জামিন দিলেও কাউন্সিলর রূপালী বেগমসহ ৩ জনের আবেদন নাকচ করে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো অন্য দু’জন হচ্ছেন রূপালীর ভাসুর আজিজুল হক (৫২) ও ছামিদুল হক (৪৮)। মামলার পরও এতদিন প্রকাশ্যেই ঘুরছিলেন সেই কাউন্সিলর রূপালী। অন্যদিকে প্রভাবশালী ওই মহিলা কাউন্সিলরকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। সেইসাথে তার হাতে হয়রানীর শিকার লোকজন স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
গত ৫ এপ্রিল সকালে নকলা উপজেলার কায়দা গ্রামে একটি জায়গার মালিকানা ও কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় সংরক্ষিত ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর রূপালী বেগমের পরিবারের লোকজন নিয়ামত আলীদের উপর হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও মারপিট করে। এতে নিয়ামত আলীর ছেলে মোবারক হোসেন, স্বজন দেলোয়ার হোসেন, নুরজাহান ও ছাইফুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় ৭ এপ্রিল কাউন্সিলর রূপালী বেগম, তার স্বামী আমিরুল ইসলামসহ ১২জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের হলে আদালত তা নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ডের জন্য নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। কিন্তু আদেশের কপি সেদিনই থানায় পৌঁছলেও মামলাটি দীর্ঘ ২১দিন পর ২৮ এপ্রিল রেকর্ড হয়।
অভিযোগ উঠেছে, মহিলা কাউন্সিলর রূপালী নিজে এবং আরও প্রভাবশালী মহলের তদবিরে একই দিনে হামলা-ভাংচুরের অভিযোগে নিয়ামত আলী গংদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনে মামলা দিয়ে অনার্স পরীক্ষার্থী মেয়েসহ চাকরিজীবী, নাবালক ও বৃদ্ধকে গ্রেফতার করিয়ে হাজত খাটিয়েছেন।
অন্যদিকে স্বামী-সন্তানসহ তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগে মামলার পরও এতদিন কেবল এলাকাতেই নয়, কর্মস্থল থেকে শুরু করে থানা, কোর্ট-কাচারিতেও প্রকাশ্যেই ঘুরছিলেন রূপালী। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত না হলেও ক্ষমতার সকল মহলেই রয়েছে তার প্রভাব।