দীর্ঘদিন পর মন্ত্রী শূণ্য হলো শেরপুর। সবশেষ শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এবার একাদশ জাতীয় সংসদের কৃষিমন্ত্রী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক। এর আগে আওয়ামী লীগের সবগুলো সরকারের আমলে মোট ১৫ বছর কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন বেগম মতিয়া চৌধুরী। এবারও মতিয়া চৌধুরী একই আসন থেকে বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন।
নতুন মন্ত্রীসভায় সদস্য সংখ্যা ৪৬ জন। এই মন্ত্রীসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও ৩ জন উপমন্ত্রী থাকছেন।
আজ রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলম ঘোষিত তথ্য সূত্রে এসব জানা গেছে।
এবারের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী নিজের কাছে রেখেছেন।
এদিকে নতুন মন্ত্রিসভায় বেগম মতিয়া চৌধুরীর নাম না থাকায় জেলা জুড়েই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। কেউ কেউ আবার হতাশার কথা জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন বলেন, গত ১৫ বছরের তুলনায় আগামী পাঁচ বছর আরো গুরুত্বপূর্ণ। সে হিসাবে বেগম মতিয়া চৌধুরীর মন্ত্রীত্ব পাওয়া জরুরী ছিল। তিনি মন্ত্রী না হওয়ায় আমরা খুব কষ্ট পাচ্ছি। গতকাল পর্যন্ত মতিয়া চৌধুরী আমাদের মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু আজ তিনি ওই পদে নেই এ বিষয়টা আমি ভাবতেই পারছিনা। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় ছিল তার পুরো সময়েই মতিয়া চৌধুরী মন্ত্রী ছিলেন। আজকের এমন খবরে নেতাকর্মীদের মাঝে নিস্তেজ নিস্তেজ ভাব চলে এসেছে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ এ প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, যেহেতু আগামীকাল সোমবার বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত শপথ নেয়ার সময় আছে এর মধ্যে অনেক চেঞ্জও হতে পারে।
এ সম্পর্কে নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল হক মাস্টার বলেন, আমরা আশা করছি বেগম মতিয়া চৌধুরীকে আরো ভাল পদ দেয়া হবে, সে আশায় আমরা বসে আছি। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে অনেক কিছুই দিতে পারে। কারণ বেগম মতিয়া চৌধুরীর কর্মনিষ্ঠা, দলের দীর্ঘদিনের পরিক্ষীত একজন নেতা, তার সততা, অভিজ্ঞতা ও সফল কৃষিমন্ত্রীত্ব সহ অনেক গুণই তার রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি দল তাকে আরো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিবে।
প্রসঙ্গত, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মধ্যে শেরপুর-২ (নালিতাবাড়ী-নকলা) আসনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন রাজনৈতিক মহল। কারণ ১৯৭৯ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে মরহুম আবদুস সালাম এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হন। এরপর থেকে এ আসনে যেই নির্বাচিত হয়েছেন প্রায় সবাই মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, হুইপের মতো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সবশেষ এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন অগ্নিকন্যা বেগম মতিয়া চৌধুরী।