কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের দ্বিতীয় দিনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। যানজটের প্রভাব রাজধানী ঢাকা ও তার আশপাশের সড়কে পড়েছে।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে যানজটের সৃষ্টি হলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। এতে করে কাকলী, বনানী, বিশ্বরোড, খিলক্ষেত, এয়ারপোর্ট, আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা যায়।
এ সময় বাসের যাত্রী ও পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেকে বাধ্য হয়ে বাস থেকে নেমে হেঁটেই রওনা দেন গন্তব্যের পথে। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ঈদের আগে ঘরমুখো যাত্রীর চাপ বাড়ায় সকাল সাড়ে আটটার পর থেকেই যানজট শুরু হয়।
জানা গেছে, লকডাউন শিথিলের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার রাজধানী জুড়ে ছিল যানবাহনের চাপ। কোথাও কোথাও ছিল যানজট। কিন্তু শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন সত্ত্বেও ময়মনসিংহমুখী সব যানবাহন সড়কে আটকা পড়েছে।
ট্রাফিক পুলিশ ও যানবাহন চালকদের মতে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এয়ারপোর্ট থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। এ কাজ করতে গিয়ে সড়কে তৈরি করে রাখা হয়েছে গর্ত, ফেলে রাখা হয়েছে বালু-মাটিসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী। পুরো সড়কই এখন খানাখন্দে ভরা। এসব কারণে যানবাহন চলাচল করতে না পেরে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এর মাঝে আজ সকাল থেকে যানজটের সৃষ্টি হলে তা ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীতে।
রাজধানীর বিশ্বরোড, খিলক্ষেত, এয়ারপোর্ট, আজমপুর ও আব্দুল্লাহপুর এলাকায় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকেই গাজীপুরে সৃষ্টি হওয়া যানজট চলে যায় রাজধানীর মহাখালী পর্যন্ত। এর মধ্যে আব্দুল্লাহপুর থেকে প্রায় বনানী পর্যন্ত সড়ক জুড়েই এখন যানজট। সকাল থেকেই যানবাহনগুলো চলাচল করছে খুব ধীরগতিতে।
গাজীপুর যেতে বাসা থেকে বের হওয়া কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সকাল ৮টা ১০ মিনিটে তেজগাঁও স্টেশনে একটা লোকাল ট্রেন মিস করার পর সাতরাস্তা এসে সাড়ে আটটার দিকে বাসে উঠলাম। প্রথমে ভালোই চলছিল। ফাঁকা রাস্তায় একটানে কাকলী-বনানী চলে আসি। কিন্তু কাকলী থেকে আর্মি স্টেডিয়ামের সামনের ব্রিজে ওঠার পর গাড়ি স্লো হয়ে গেল।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেই পৌনে আটটা থেকে বাসে বসে আছি। ৫ থেকে ১০ ফুট আগায় আবার থামে। খিলক্ষেত আসতেই পৌনে ১০টা বাজল।’
ভূঁইয়া পরিবহনের চালক মুসা মিয়া বলেন, ‘৯৫০ টাকা দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসার্ট থেকে বুধবার বিকেলে রওয়ানা দিলাম। ডাইরেক্ট গাড়িতে ভাড়া বেশি দিয়ে ঢাকা যাচ্ছি। কারণ সকাল থেকে গাড়ি চালাব। কিন্তু যানজটে আটকা পড়ছি।’
যানজটে আটকে থাকা বাসের এক চালক বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ থেকেই জ্যামে পড়লাম, যেখানে আসার কথা ভোরে সেখানে ঢাকা পৌঁছলাম ১০টার পর। গতকাল জ্যাম ছিল, আজও একই অবস্থা। গাড়ি নিয়ে বের হলাম প্রথম যাত্রায় সকাল থেকেই জ্যাম।’
খিলক্ষেত পুলিশ বক্সের পরিদর্শক বলেন, ‘আমরা সকাল থেকেই চেষ্টা করছি যানবাহনগুলোর গতি ধরে রাখতে। কিন্তু সামনের (গাজীপুর) লাইন পরিষ্কার না থাকায় কোনোভাবেই তা পারছি না। এসব কারণে যানবাহনগুলো চলছে ধীরগতিতে। মাঝে কিছু সময়ের জন্য গাড়ির গতি বাড়লেও মুহূর্তেই তা থেমে যাচ্ছে। এ কারণে যাত্রীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে।’
#জাগো নিউজ