ট্রাইবাল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে। বুধবার (২০ অক্টোবর) উপজেলার ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু আদিবাসীদের একটি পক্ষ মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) শেরপুর জেলা জজ আদালতে একটি মিস আপিল করলে আদালত আগামী ১৮ নভেম্বর শুনানীর দিন ধার্য করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সমাজ সেবা অফিসারকে নোটিশ পাঠিয়েছে।
এদিকে, আদালতের নোটিশ ওই দুই কর্মকর্তা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ করেছে মিস আপিলের বাদী ও ট্রাইবালের সাবেক চেয়ারম্যান লুইস নেংমিংজাসহ বাদী ১৪ আদিবাসী। যারা ভোটার হতে পারেন নি। তবে সমাজ কল্যাণ অফিসার বলেছেন, অফিস সময় শেষ হওয়ার পর তাদের কাছে নোটিশ এসেছে তাই ইউএনও মহোদয় নোটিশ না নিতে তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট হরিদাস কর্মকার স্বপন বলেন, ১৮ অক্টোবর শেরপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আমার মক্কেল মঙ্গলবার জেলা দায়রা জজ বাহাদুরের আদালতে একটি মিস অপিল দায়ের করে। সেই আপিল গ্রহণ করে আদালত শুনানীর নির্দেশ দেন। কিন্তু জজ কোর্টের জারিকারকের কাছ থেকে ইউএনও এবং সমাজ সেবা অফিসার তা নেননি। তিনি প্রশ্ন করেন নির্বাচনটি কি তাদের ব্যক্তিগত কিনা। ওই আইনজীবি আরও বলেন, ২০১৩ সালে নালিতাবাড়ী ট্রাইবাল নির্বাচনে ভোটার ছিল ৫ হাজার ২শ। বর্তমানে ভোটার আছে প্রায় ৮ হাজার ৫শ। কিন্তু তারা একটি ভেক ভোটার তালিকা করে মাত্র ২ হাজার ৭শ ভোটার নিয়ে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সমাজ সেবা অফিসার যে তালিকা করেছেন তাতে প্রায় ১০০ মৃত ভোটার রয়েছেন। এ বিষয়টি মাননীয় জজ বাহাদুর মহোদয়কে আমরা অবহিত করেছি। আমরা আদালতে বলেছি, নির্বাচনটি একতরফা হচ্ছে। হাজার হাজার ভোটার ভোট দিতে পারছেন না। তার প্রেক্ষিতে তিনি ওই আদেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলার সমাজ সেবা অফিসার মোজাম্মেল হক বলেন, ইউএনও মহোদয় তাকে জানিয়ে চিঠি রিসিভ করতে বলেছেন। অফিস সময়ে চিঠি আসেনি বলে আমি চিঠি নেইনি। তারা ৫টা ৪০ মিনিটে এসেছে।
মামলার বাদী লুইস নেংমিংজাসহ অন্য বাদীরা বলেন, আদেশ পাওয়ার পর আমরা শেরপুর থেকে অফিস চলাকালীন সময়ে নালিতাবাড়ী আসি। কিন্তু তখন সমাজকল্যাণ অফিসার অফিসে ছিলেন না। আমরা অনেকক্ষণ বসে থাকি। তিনি এসে নোটিশের কথা শুনে বলেন অফিস সময় শেষ। আমি নোটিশ নিতে পারবো না।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলেনা পারভীন বলেন, আমি যখন অফিসিয়ালি চিঠি পাবো তখন ব্যবস্থা নিতে পারবো। ফোনের কথায় কোন অ্যাকশান নিতে পারবো না। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালত কোন আদেশ দিলে আমাকে মেনে নিতে হবে।