শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের বাজারে বৃষ্টি হলেই জমে যায় হাঁটু পানি। দশ মিনিটের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় বাজার হয়ে যায় ভাসমান বাজার। পরবর্তী ঘন্টা খানেকের মধ্যে পানি নেমে গেলেও পুরো বাজার হয়ে যায় কর্দমাক্ত। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে কাঁচা বাজার, মসজিদ রোড, কাঁচারি ও ধান হাটি এলাকার মানুষ।
বর্ষার মৌসুমে এই দৃশ্য প্রতিদিনের। এছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ের বৃষ্টিতেও সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। বাজারের পাশ দিয়ে ড্রেনের ব্যবস্থা থাকলেও কাঁচাবাজারের উচ্ছিষ্ট আবর্জনায় ড্রেনের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ দূর্ভোগ এখন চরমে। বছরের পর বছর এ সমস্যা নিয়েই চলছে এই এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। সম্প্রতি ফেসবুক ভিত্তিক “শেরপুর ৩৬০ ডিগ্রি” ও “সিটিজেন জার্নালিস্ট শেরপুর” গ্রুপে এ বিষয়ে একাধিক ছবি ও মন্তব্য করেন স্থানীয়রা।
আজ রবিবার, সাপ্তাহিক বাজারের দিনে এই বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে ক্রেতা ও বিক্রেতারা। দুপুরে আধ ঘন্টার বৃষ্টিতে হাঁটু পানি জমে যায় মসজিদ রোডসহ কাঁচা বাজারে। জামে মসজিদের রাস্তাটি নিচু হওয়ার বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। রাস্তার পার্শে ব্যক্তি মালিকানায় মার্কেটগুলো রাস্তা থেকে উঁচুতে নির্মাণ করায় সহজে পানি রাস্তায় নেমে যায়। এ কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়েই বাজারে ও মসজিদে প্রতিদিন মুসল্লি ও ক্রেতা-বিক্রেতারা ভোগান্তি নিয়েই যাতায়াত করে।
জলাবদ্ধতার বিষয়ে কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম শেরপুর টাইমসকে বলেন, এ রাস্তায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। আর সকালের দিকে বৃষ্টি হলে এ জলবদ্ধতা থেকে যায় সারাদিন। এ এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো নয়। এ ভোগান্তি বছরের পর বছর চললেও কারো কোন দৃষ্টি নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, গত দশ বছরের বেশি সময় ধরে এ সমস্যা রয়েছে। কাউকে সংস্কারের কথা বলে কাজ হয়নি। বর্ষা মৌসুমে এই জলাবদ্ধতা আমাদের ব্যবসায় চরম প্রভাব ফেলে। ক্রেতারা আসতে পারে না। এ বিষয়ে বাজারের ইজারাদাররাও ব্যপক উদাসীন। এটা আমাদের গলার কাঁটা হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
স্থানীয়রা বলছেন, একটি উপজেলার মূল বাজারে এই জলাবদ্ধতা স্থানীয় অর্থনীতিতে ব্যপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। একাধিকবার এ বিষয়ে স্থানীয় প্রতিনিধি ও প্রশাসনকে অবহিত করেও কোন সুরাহা না হওয়ায় হতাশ স্থানীয়রা।
ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন শেরপুর টাইমসকে বলেন, সমস্যাটা দিন দিন প্রকট আকার ধারন করছে। বাজারের ড্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ সমস্যা সমাধান করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া রাস্তাটা নিচু হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষার পর মাটি কেটে উঁচু করে এখানে ঢালাই রাস্তা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুন শেরপুর টাইমসকে মুঠেফোনে বলেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আমরা বসেছি। চলমান বর্ষার পর বাজারের ইজারাদার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নিয়ে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।