আগামী জানুয়ারির মধ্যে দেশে চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল সেবা ফোর-জি চালু হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। বুধবার (২৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ফোর-জি চালুর ক্ষেত্রে অপারেটরদের ২৩টি প্রস্তাবের ২২টি শতভাগ পূরণ করা হয়েছে। এছাড়া বাকি একটি শর্তের আংশিক পূরণ হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন করা সার-সংক্ষেপ আজ আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। আমরা এটি আজকে বিটিআরসিতে (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন) পাঠিয়ে দেব।
তিনি বলেন, ফোর-জি চালু করার জন্য আমাদের যে কার্যক্রম, সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে আজকে থেকে শুরু হয়ে গেছে। জানুয়ারির দিকে এ সেবা দিতে পারব আমরা। এতদিন সভা, মতামত গ্রহণ, গাইডলাইন সংশোধন- এ প্রাথমিক কাজগুলো করেছি। আজকে থেকে দ্বিতীয় ধাপের দিকে অগ্রসর হব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বরে চালু করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও নতুন বছরে সরকারের উপহার হিসেবে জনগণকে এ সেবাটা দেব। তবে আমাদের সবসময় টার্গেট থাকবে যত দ্রুত সম্ভব এটা চালু করা। আমাদের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে, কনভার্সন ফি জমা দেয়ার ব্যাপার আছে। কত দ্রুত তারা (অপারেটররা) ফি জমা দেন, এগুলো মাথায় রেখে আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে কাজটা শুরু করতে চাচ্ছি। আশা করছি, নতুন বছরের প্রথমে জানুয়ারিতে জনগণের কাছে সেবাটা পৌঁছে দিতে সমর্থ হব।
মোবাইল ফোন অপারেটরদের দাবির মুখে তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) ‘প্রযুক্তি নিরপেক্ষতায় (টেকনোলজি নিউট্রালিটি)’ রূপান্তরে শর্তসাপেক্ষে খরচে ছাড় দেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৮০০ ও ৯০০ মেগাহার্টজের তরঙ্গ টেকনোলজি নিউট্রালিটিতে রূপান্তরে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ১৮০০ ও ৯০০ মেগাহার্টজের তরঙ্গ যদি একধাপে রূপান্তর করেন তাহলে ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আংশিক রূপান্তর করলে ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
তারানা হালিম বলেন, ফোর-জি লাইসেন্স নীতিমালায় ফোর-জি’র প্রাথমিক স্পিড ২০ মেগাবিটস পার সেকেন্ড (এমবিপিএস) নির্ধারণ করা হয়েছে। বিটিআরসি সময় সময় গতি পরিবর্তন করতে পারবে বলে নীতিমালায় রাখা হয়েছে। আগের নীতিমালায় এই স্পিড নূন্যতম ১০০ এমপিবিএস রাখা হয়েছিল।রেকর্ড সময়সীমা কমিয়ে এসে ২ বছর করা হয়ে্ছে। যা আগে ১২ বছর ছিল। ভ্যাট ও ট্যাক্সের বিষয়ে বিটিআরসিতে জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা না রেখে যথাযথ কর্তৃপক্ষের রাখা হয়েছে।
ফোর-জি লাইসেন্স আবেদন ফি ৫ লাখ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, লাইসেন্স অ্যাকুইজিশন ফি ১৫ কোটি থেকে ১০ কোটি, লাইসেন্স নবায়ন ফি সাড়ে ৭ কোটি থেকে ৫ কোটি, রেভিনিউ শেয়ারিং ১৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, ব্যাংক গ্যারান্টি ১৫০ কোটি টাকা করা হয়েছে। অপারেটররা নেটওয়ার্ক উন্নয়নে ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপনের বিষয়টি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছিল সেই বিষয়টাও শর্তসাপেক্ষে বিবেচনা করা হয়েছে এবং এর ফলে যেসব প্রতিষ্ঠান (এনটিটিএন) ফাইবার স্থাপন করে তাদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না।