প্রতিটি দৃশ্যই চিরচেনা। ছাতা চেয়ারে (কিটকট) গা পাতিয়ে শুলেই দেখা মিলছে পানি আর ছোট্ট ছোট্ট ঢেউ। পাশেই বসা ডাব বিক্রেতা। ইঙ্গি পেলেই ডাবে কাঁচি চালাচ্ছেন তারা! কক্সবাজার বা পতেঙ্গা সৈকতের কথা বলা হচ্ছে না এখানে। এটা কোনো সমুদ্র সৈকতই নয়, জেগে ওঠা চর মাত্র! তবে সেখানে গেলে আপনার মনে এটা বোধহয় কক্সবাজারের ‘মিনি সংস্করণ’!
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা পাড়ে গড়ে উঠেছে মোহনপুর পযর্টনকেন্দ্র। অনেকেই একে মোহনার চর বলেন। আবার কারো কাছে চাঁদপুরের সৈকত কিংবা ‘মিনি’ কক্সবাজার নামে পরিচিত।
প্রতিদিন শত শত ভ্রমণপিপাসুর কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে জায়গাটি। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে মানুষের সংখ্যা হাজার ছড়িয়ে যায়। যা গত ৩-৪ মাস আগেও কল্পনাতীত ছিল।
মোহনপুরের প্রায় ১৩ একর জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা পর্যটনকেন্দ্রটিতে ঢুকতে জনপ্রতি প্রবেশমূল্য হিসেবে গুনতে হবে ২০ টাকা। নান্দনিক সৌন্দর্য ও আধুনিকতার মিশেলে গড়া এ বিনোদন কেন্দ্রে রয়েছে ভালো নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো পাতানো বিছানার উপরে ছায়ার জন্য রয়েছে লাল ছাতা। আর আছে ঘোড়ায় চড়া, স্পিডবোট বা নৌকায় করে নদী ভ্রমণের সুব্যবস্থা। স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবারের জোগান দিতে পর্যটনকেন্দ্রের ভেতরেই রয়েছে ‘দ্য শিপ ইন রেস্টুরেন্ট’। বেড়াতে আসা শিশু-কিশোরদের জন্য বিভিন্ন রাইডে চড়ার সুবিধা করে দেয়ার কাজও চলছে।
বিনোদন কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজি মিজানুর রহমান জানান, জায়গাটিতে দিন দিন ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা বাড়ছে। ছুটির দিনে প্রায় ৮-১০ হাজার মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন।
রাজধানীর মিটফোর্ড থেকে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী রঞ্জন সুর জানান, তারা এখানে বনভোজন করতে এসেছেন। এখানকার পরিবেশ ও আয়োজন তাদের ভালো লেগেছে। তারা মোট ৩৫০ জন একসঙ্গে এসেছেন।
এদিকে পর্যটনকেন্দ্রের ভেতরে কটেজ বা রেস্ট হাউজ নির্মাণ করছে কতৃপক্ষ। যেখানে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য রাত কাটানোর ব্যবস্থা থাকবে। উপভোগ করতে পারবেন রাতের আলোকিত লঞ্চ-স্টিমার চলাচলের মনোরম দৃশ্য। কেন্দ্রটিকে ঘিরে অনেকের আয়-রোজগার বেড়েছে। ছোট ও মাঝারি দোকানিদের জীবন-জীবিকার পথ সুগম হয়েছে।