ভারত সীমান্ত ঘেঁষা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের প্রায় ১৫টি স্থানে স্থানীয় ও ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিরা প্রায় চার হাজার কাঠের বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন।
সরেজিমনে দেখা গেছে, উপজেলার গারো পাহাড়ের সারি সারি শাল, সেগুন, মহুয়া, গজারী, আকাশমনি, ইউকেলিপটাস, মিলজিয়ামসহ নানা প্রজাতির গাছ-গাছালিঘেরা উঁচু-নিচু টিলা বেষ্টিত অঞ্চলের ছোট গজনীতে সাতক্ষীরার সুজন, জসিম, নওকুচিতে গাজীপুরে দিনাজপুরের বিল্লাল, গজনী অবকাশে ঢাকার রতন, সন্ধ্যাকুরায় টাঙ্গাইলের কাউছার, দরবেশ তলায় স্থানীয় সাম্বুদা, পানবরের কানুদা কুচ, নওকুচি মহন কোচ, বাকাকুড়ায় মিজান, গুরুচরণ দুধনইতে স্থানীয় হালিম কাঠের বাক্স বসিয়ে মৌচাষ করছেন। এদের মধ্যে অনেক চাষী বাক্সের সামনে আগুনের ধোঁয়া দিয়ে মধু সংগ্রহ ও মৌমাছির পরিচর্যা করছেন।
উপজেলার গুরুচরণ দুধনই গ্রামের স্থানীয় মৌচাষি হালিম বলেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনে (বিসিক) মৌমাছি প্রকল্পের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি মৌচাষ শুরু করেন। তিনি মধু চাষ করে স্বালম্বী হয়েছেন। এ উপজেলায় বর্তমানে ১২ থেকে ১৫টি স্থানীয় ও ভ্রাম্যমাণ মৌচাষের দল ৪ হাজার কাঠের বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ছোট গজনীতে সাতক্ষীরার ভ্রাম্যমাণ মৌচাষি সুজন বলেন, আমরা গত অক্টোবর মাসের প্রথমেই সময়ে এখানে এসেছি। এ সময়টুকু এ পাহাড়ে মৌচাষের উপযুক্ত সময় ছিল। আমি ২০০টি বাক্স থেকে একমাসে ৮মণ মধু সংগ্রহ করেছি। এ এলাকায় আর এক সপ্তাহ আছি, এর মধ্যেই আরও তিন থেকে চার মণ মধু সংগ্রহ করা যাবে। পরর্বতীতে সরিষা চাষ হচ্ছে এমন এলাকায় গিয়ে মৌচাষ করবেন বলে জানিয়েছেন এ মৌচাষি।
বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সুমন আহমেদ বলেন, গারো পাহাড়ের বনাঞ্চলে বিভিন্ন প্রকারের ফুল জন্মে আর সেখান থেকেই মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে। তাই বন মধু চাষের জন্য উপযুক্ত স্থান। বর্তমানে গারো পাহাড়ের বেশ কিছু স্থানে মৌচাষিরা কাঠের বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, এ উপজেলায় মৌচাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বর্তমানে এখানে ১২ থেকে ১৫টি স্থানীয় ও ভ্রাম্যমান মৌচাষির দল মধু সংগ্রহ করছেন। তাদের যেকোন সমস্যার কথা জানা মাত্রই, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।