শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ি এলাকায় বন্যহাতি তান্ডব চালিয়ে কৃষকের ৬ টি বসতঘর ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে ঘরে থাকা ধানচাল খেয়ে সাবাড় করেছে। বুধবার (০৩ জুন) রাত ৯ টার দিকে উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নাকুগাঁও স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় প্রায় ৫০/৬০ টি বন্যহাতির একটি দল এই তান্ডব চালায়। বন্যহাতি তাড়াতে গিয়ে গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাস (৩৮) স্ট্রোক করে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন স্থানীয় আরো কয়েকজন কৃষক।
জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্ত এলাকায় প্রায় প্রতিরাতেই একদল বন্যহাতি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে। বুধবার রাত ৯ টার দিকে ৫০/৬০টি বন্যহাতি সীমান্তঘেঁষা নাকুগাঁও স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় নেমে এসে তান্ডব চালায়। বন্যহাতির দলটি কৃষক রঞ্জিত ঘোষ, সিন্ধু ঢালু, গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাস ও সুমন রবিদাসের ছয়টি বসতঘর ভেঙে ফেলে। এসময় আসবাবপত্র ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে ঘরে থাকা ধানচাল খেয়ে ও ছিটিয়ে নষ্ট করে। এছাড়া কৃষক রুপেন ঢালুর (৪৫) ২০ শতাংশ জমির আমন বীজতলা পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে। বসতঘর ভেঙে কৃষক রঞ্জিত ঘোষের ঘরে থাকা ২০ মণ ধান ও ৫ মণ চাল, সিন্ধু ঢালুর ২০ মণ ধান ও চাল, গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাসের ১৫ মণ ধান, সুমন রবিদাসের ১৫ মণ ধানও চাল খেয়ে এবং মাটিতে ছিটিয়ে নষ্ট করে। এমনকি ঘরে থাকা আসবাবপত্র ও ফ্রীজ ভেঙে ফেলে। একইসাথে বাড়ির উঠানে থাকা কাঁঠাল ও আমগাছ ভেঙে ফেলে হাতির দল। তান্ডবের সময় ওই হাতিরদল কৃষক রঞ্জিত ঘোষের গোয়াল ঘর ভেঙে একটি গরুকে আহত করে। গ্রামবাসী হাতির তান্ডব থেকে রক্ষা পেতে প্রতিরোধ গড়তে গিয়ে গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাস (৩৮) স্ট্রোক করে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন স্থানীয় আরো কয়েকজন কৃষক।
ভুক্তভোগী কৃষক রঞ্জিত ঘোষ বলেন, আমার সারাবছরের খাওয়ার ধানচাল আছিলো ঘরে। আত্তি (হাতি) তো ঘর ভাইঙ্গা আমার ঘরের আসবাবপত্রসহ সবশেষ কইরা দিলো। আমি সারাবছর পরিবার লইয়া কি খামু।
সংশ্লিষ্ট নয়াবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে বসতঘর, আসবাবপত্র ও ধানচাল খেয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। ক্ষুধার্ত হাতিগুলোর জন্য পাহাড়ে হাতির খাদ্যের ব্যবস্থা করা গেলে সীমান্তের মানুষ একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতো।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ফরেস্টরেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বন্যহাতির দলটি নাঁকুগাও এলাকার পাহাড়ে অবস্থান করছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বনবিভাগের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা করা হবে।