নাঈম ইসলাম : বসন্তের ছোঁয়ায় কোকিল গাইছে গান, ভ্রমরও করছে খেলা । ফাগুনের হাওয়ায় পাঠক হৃদয়ে লেগেছে দোলা । আর তাতে মুখরিত শেরপুরের বই মেলা।
অভিভাবকের হাতধরে আগত শিশুদের কলরবে মুখর শেরপুরে সাতদিনব্যাপি চলা বইমেলা । শেরপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত বইমেলার চতুর্থ দিনে শিশুদের ভীড় ছিল লক্ষণীয়। এ স্টল সে স্টল ঘুরে তারা খুঁজছে তাদের পছন্দের বই। শিশুরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে কেউ দেখছে সাইন্স ফিকশন,আবার কারর পছন্দ ভূতের গল্প । তবে গল্প, কার্টুন ও ছড়ার বই গুলোর দিকেই শিশুদের বাড়তি ঝোঁক দেখা গেছে। অনেক শিশুকে বাবা মার কাছে বায়না ধরতেও দেখা গেছে। তবে শিশুদের জন্য আলাদা ষ্টল ও বাংলা একাডেমীর মত শিশু প্রহরের দাবীও জানিয়েছেন আগত অনেক অভিভাবক।
সরেজমিনে আজ শহরের ডিসি উদ্যানে বইমেলা ঘুরে দেখা গেছে, শিশুদের চাহিদা মেটাতে নানা ধরনের শিশুতোষ বইয়ের পসরা সাজিয়েছে দোকানিরা। বর্ণমালা চেনেনা,বই কি বুঝেনা এমন শিশুদেরও এ বই মেলায় আনতে ভুল করেনি অনেক অভিবাবক। তবে রঙিন ছবির বইয়ের অভাবের কথা বললেন অনেকেই।
মেলায় আসা শায়লা খানম বলেন, আমার সোনামণি পড়তে পারেনা কিন্তু বিভিন্ন ধরনের ছবি দেখে বলতে পারে। তাই চকচকে ছবির বই খুঁজছি।
আরেক অভিবাবক মেহরিন জাহান জানান,আমার সন্তান নার্সারীতে পড়ে,তার জন্য পাঁচটি কার্টুনের বই নিলাম। কার্টুনের মাধ্যমে হলেও বইয়ের প্রতি এই যে আগ্রহ, তা একটু হলেও তাদের পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
এদিকে এবারের মেলায় প্রকাশিত হয়েছে শেরপুরের কবি লেখকদের প্রায় ডজনখানেক বই। স্থানীয় লেখকদের প্রতি তরুণ তরুণীদের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। প্রায় প্রতিটি স্টলেই পাওয়া যাচ্ছে বইগুলো।
বই বিপনী স্টলের বিক্রেতা বলেন, মেলায় শেরপুরের স্থানীয় কবি লেখকদের লেখা বই ও শিশুতোষ গ্রন্থের বেশ চাহিদা । তবে মেলার সময় আরেকটু বাড়ালে বেচাকেনা আরও ভাল হতো।
এবারের বইমেলার সার্বিক অবস্থা নিয়ে জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন শেরপুর টাইমসকে বলেন, দীর্ঘ বিরতির পর এবারের বই মেলায় পাঠক ও দর্শণার্থীদের বেশ ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই বইমেলা নতুন পাঠক তৈরী করতে পারবে বলে আশা করছি। সময়ের পরিবর্তনে মানুষের চাহিদারও পরিবর্তন হয়েছে। তবে আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় নিয়মিত বই পড়া জরুরী।
প্রায় ৩ বছর পর আয়োজিত এই বইমেলায় শেরপুরের নবীণ ও প্রবীণ পাঠকদের মনে বই পড়ার আগ্রহ জন্মাবে। বই পড়ে আলোকিত মানুষ ও আলোকিত পৃথিবী গড়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টরা।