অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি খারাপ কার্যক্রম। এরপরও এ বছর এমপিওভুক্তির জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার অঙ্গীকার বেসরকারি ব্যাংকগুলো শিগগিরই পুরোপুরি বাস্তবায়ন করবে বলে তিনি আশা করেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।
১৪ দলের শরিক তরীকত ফেডারেশনের সাংসদ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এমপিওভুক্তির জন্য এ অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে এমপিওভুক্তি একটি খারাপ কার্যক্রম, সরকার তা গ্রহণ করেছিল এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। এতে শুধু কিছু শিক্ষক ও কর্মচারীর বেতন দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য এটা কোনো ভালো কার্যক্রম নয়। উপবৃত্তিতে অর্থ দেওয়া গেলে সেটা অনেক ভালো কাজ করে। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য যদি স্কুল ফিডিংয়ের ব্যবস্থা করা যায়, তা অনেক ভালো হবে।
মুহিত আরও বলেন, এমপিওভুক্তি কার্যক্রমে যথেষ্ট জালিয়াতি ছিল। শিক্ষামন্ত্রী তা অনেক কমাচ্ছেন। কিন্তু এমপিওভুক্তি খুব ভালো ‘প্রোগ্রাম’ নয়। অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনি তাঁর এই মতামত তুলে ধরেছেন, সাংসদেরা এখন সেটা চিন্তা করে দেখবেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমানত ও ঋণের সুদের হার সরকার নির্ধারণ করে না। তবে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ঋণের সুদের হার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদেরকে সহজ সুদে ঋণ দিতে বলা হয়েছে। তারা নিজেরাই প্রস্তাব করেছে ঋণের সুদের হার এক ডিজিটে নিয়ে আসবেন। সে জন্য তারা তারিখও দিয়েছে। এখন পর্যন্ত সেটা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। তবে কিছুটা কার্যকর হচ্ছে। এ বিষয়ে তারা ডিপোজিট রেটসহ কিছু দাবিদাওয়া করছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এই ডিপোজিটের রেটও আমরা ঠিক করি না। তাদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে কয়েকটি পদক্ষেপ আমরা নিয়েছে। এখন সরকারি প্রতিষ্ঠান এখন যথেষ্ট টাকাপয়সা বেসরকারি ব্যাংকে জমা দিতে পারে। আমরা সরকারি ব্যাংকগুলোকে বলেছি, তারাও যতটুকু পারে ঋণের সুদের যেন কমায়। যতটুকু পারছি আমরা করছি। আমরা আশা করি, ব্যাংকারটা যেটা অঙ্গীকার করেছেন, সেটা সত্বরই কার্যকর হবে।’
সরকারি দলের সাংসদ নজরুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে গত নয় বছরে বাংলাদেশে মোট ৬৪টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে ও ৪৫টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। সরকারি দলের মামুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মোবাইল ব্যাংকিং থেকে সরকার প্রায় ৩৬৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে; যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৩৩ কোটি টাকা বেশি।
টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম চালুর উদ্যোগ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কেন্দ্রীয়ভাবে একটি টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এর অধীনে একটি ডিজিটাল-ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে, যেটি তথ্য সংগ্রহ ও রিপোর্টিং প্রক্রিয়াকে স্বয়ংক্রিয় করবে। লাইসেন্সধারীদের প্রয়োজনীয় সব তথ্য বাস্তব সময়ে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
সূত্র: প্রথম আলো।