শনিবার বিকেল ৪ টা ১৫ মিনিট। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী অবকাশ থেকে বনভোজন শেষ করে ফিরছে দর্শনার্থীদের বাস। হঠাৎ চোখ আটকে গেলো বেশ কয়েকটি চলন্ত বাসের ছাদে উল্লাসে মেতে ওঠা উঠতি বয়সী তরুণদের দিকে।
সেফটি ফার্স্ট (নিরাপত্তাই প্রথম) এই কথাটি মনে পড়ে গেলো প্রথমেই। তুমুল উল্লাসে মেতে ওঠা এই তরুণদের জীবনের নিরাপত্তা কতুটুকু? ভাবতেই নিজের গা শিউরে উঠছিলো বারবার। শেরপুর টু ঝিনাইগাতী সড়কের চেহারা আগের মতো নেই এখন। যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহন। সময়ের সাথে বাড়ছে এই সড়কে ইজিবাইক আর সিএনজি। খানিকটা পরে পরেই বাধ্য হয়ে ব্রেক কষতে হচ্ছে সব ধরনের যানবাহনের ড্রাইভারকে। শীতকালে এই সড়কে আলাদা ব্যস্ততা যোগ হয়েছে, ইটভাটার মাটি টানা বেকু ট্রাক আর বনভোজনে আসা যানবাহনের। সাঁ সাঁ করে টেনে যাচ্ছে, দম ফেলার ফুরসৎ নেই।
যেই বাসের ছাদে ভুভুজেলা ফুঁঁকাতে ফুঁঁকাতে নেচে গেয়ে বাড়ি ফিরছে তরুণরা, তারা হয়ত জানেই না এই রাস্তাটি কতটা ব্যস্ত আর কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তাদের জন্য। এমনিতেই বাসের ছাদে উঠে যাত্রা নিরাপদ নয় এবং আইনত নিষিদ্ধ। বিগত সময়ে এই সড়কে বনভোজনে আসা বাসের ঘটে যাওয়া কিছু মর্মান্তিক দূর্ঘটনার কারণ ছিলো ছাদে ভ্রমণ।
কারণ হিসেবে হঠাৎ করে বা প্রয়োজনে ব্রেক কষার কারণে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পেরে চলন্ত বাস থেকে পড়ে যাওয়ার যেমন সম্ভাবনা থাকে ঠিক তেমনি চলন্ত বাসের ছাদে ভ্রমণ করা যাত্রীদের জন্য সড়ক ক্রস করা বিদ্যুতের তার বা গাছের ডালে আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি থাকে। আর আনন্দে উল্লসিত এসব তরুণদের জন্য এই ঝুঁকি এড়িয়ে চলা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।
তাই আমাদের শেরপুরের পর্যটন কেন্দ্রে আগত সকলের জন্য “উল্লাস হোক নিরাপদ” এই কথাটি মনে রাখা উচিত। আসুন, অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসের ছাদে ভ্রমণের মত, পর্যটন কেন্দ্রে এসে আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ করার জন্য ছাদে ভ্রমণ ত্যাগ করি। ক্ষণিকের উল্লাস যাতে করে জীবনের কোন বিপর্যয় বয়ে না আনে সেদিকে নিজেদের খেয়াল রাখা জরুরী।
ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন। ভ্রমণ হোক আনন্দময়।