আজ ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। সাংবাদিকরা প্রভাবমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করার দিন আজ। গণমাধ্যম নাকি রাষ্ট্র যন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। কিন্তু কথা আর বাস্তবতার কোন মিল খোঁজ পাওয়া যায় না। প্রশ্ন জাগে সংবাদকর্মীরা কি স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারছেন? অনিয়ম, অন্যায় আর দুর্নীতির খবর প্রকাশ করলেনতো প্রিয়জনদের বন্ধু থেকে শত্রুতে পরিনত হবেন। জানতে ইচ্ছে করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ করা কি সাংবাদিকদের কাজ? দুর্নীতি দমন কমিশনইতো আছে। সাংবাদিকরা কেন ওসব খবর লিখতে যাবে। আর লিখলেইতো মামলা হামলা অনিবার্য। তবে কেন? আমার মনে হয় সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের কাছে নয় তার বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতা আছে। সেই তাগিদ থেকেই সাংবাদিক বন্ধুরা নানা অনিয়ম ও অসঙ্গতির কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এসব খবর পরিবেশন করলে দুর্নীতিবাজরা ক্ষতিগ্রস্থ হয় বা স্বার্থের বেঘাত ঘটে। তিনি ক্ষুব্ধ হন ওই গণমাধ্যমকর্মীর উপর। কখনো শারীরিক মানসিক নির্যাতন বা আইনি লড়াইয়ে নামতে হয়। কিন্তু সাংবাদিক বন্ধুরা এই ঝুঁকি কেন নিবেন? দেশের এ পর্যন্ত যতজন সাংবাদিক হত্যা হয়েছে তার একটিরও বিচার হয়নি। কারন একটাই অপরাধীরা সংঘবদ্ধ চক্র। আপনার কি শক্তি বা অস্ত্র আছে তাদের মোকাবিলা করার। তাছাড়া আপনার এতো দরকারই পরছে কেন? কেন আপনি সত্য প্রকাশ করে শত্রু হবেন। আপনার প্রটেকশন কি আছে? তাছাড়া আপনিতো মফস্বল সাংবাদিক আপনার কোন ওয়েজবোর্ড নেই। হাতে গুনা দু’একটি মিডিয়া হাউজ ছাড়া বেতনতো দুরের কথা সম্মানীভাতাও পান না মফস্বল সাংবাদিকরা। তাহলে কেন আপনি ঝুঁকি নিবেন? বিপদে পড়লে কেউ আপনার পাশে দাড়াবে না। কারন যাদের বিরুদ্ধে খবর করবেন তাদের খুটির জোড় বেশি। আপনার অস্ত্র হলো ৫ টাকা দামের একটি কলম। কাজেই যেহেতু এ পেশায় আর্থিক ও জীবনের নিরাপত্তা নেই। তাই এই পেশা বাদ দিয়ে অন্য পেশায় মনোযোগী হোন। কিছু না করতে পারলে দুই চার জন গরীব ছাত্র প্রাইভেট পড়ান অন্তত তারা একটা ছালাম দিবে। কি করবেন ডিজিটাল যুগে হলুদ সাংবাদিকতার দিন শেষ। তবুও যদি আপনি এই পেশায় থাকতেই চান। সম্মান বজায় রেখে পাশাপাশি অন্য কিছু করুন এ দিয়ে হা হুতাশ করতে হবে। সংসারতো দুরের কথা আপনার পকেট খরচ ও ইন্টারনেট খরচও যোগাতে পারবেন না। তাই পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে শখের সাংবাদিকতা করতে পারেন। সাংবাদিক বন্ধুরা বাস্তবতার প্রেক্ষিতে অনেক তিক্ত কথা বলে ফেলেছি। আশা করি মন খরাপ করবেন না। গভীরভাবে একটু ভেবে দেখুন। সিদ্ধান্ত আপনার। শুভ হোক বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস।
লেখক- এম. সুরুজ্জামান (সাংবাদিক)।