তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়। বুধবার সচিবালয়ে ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন-২০১৭’ এর খসড়া চূড়ান্তে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সভায় ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, ২০১৭’-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ আইনটি সংসদের আগামী শীতকালীন অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে। তবে নতুন ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার বিষয়গুলো সন্নিবেশ করা হবে কিনা তা স্পষ্ট করেননি তথ্যমন্ত্রী।
গত বছরের ২২ আগস্ট ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। তবে খসড়াটি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইনমন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছিলেন, ‘যারা কনসার্ন স্টেক হোল্ডার (সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগী) তাদের নিয়ে বৈঠক করে এটাকে (খসড়া আইন) আরেকটু পরিশীলিত করবেন।’ এই প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কয়েক দফা সভা করার পর অবশেষে বুধবার খসড়াটি চূড়ান্ত হল। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়াটি চূড়ান্ত করেছি। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর আশা করছি আগামী শীতকালীন অধিবেশনে জাতীয় সংসদে এটি উত্থাপন করতে পারব। ইনু বলেন, ডিজিটাল অপরাধ মোকাবিলার জন্য এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে। সুতরাং ডিজিটাল অপরাধ মোকাবিলার বিষয়গুলো এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এদিকে সভা শেষে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমার বিশ্বাস, এই ৫৭ ধারা সেভাবে থাকবে না এবং ফ্রিডম অব স্পিচ (বাকস্বাধীনতা) রক্ষা করার জন্য যেসব চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের দরকার, সেগুলো ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও সম্প্রচার আইনে থাকবে। বুধবারের আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন চূড়ান্ত হওয়ার পর এটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বলে জানান আইনমন্ত্রী। উল্লেখ্য, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাটি প্রস্তাবিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ১৯ ধারায় পরিবর্তন করে আইনটি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছে সরকার। পরোয়ানা ছাড়া তল্লাশি, মালামাল জব্দ ও গ্রেপ্তারসংক্রান্ত বিধান রেখে ওই খসড়া চূড়ান্ত করা হচ্ছে। তবে ৫৭ ধারায় অজামিনযোগ্যের পরিবর্তে জামিনযোগ্য ও সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের স্থলে দুবছর রাখা হয়েছে খসড়ায়। বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।