শেরপুর পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের কসবা কাঠগড় মহল্লার জুব্বার মিয়া ও রোকসানা বেগম দম্পতির ২ বছর বয়সী দ্বিতীয় কণ্যা রোজা মনি। অর্থের অভাবে তার সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। রোজার বাবা জুব্বার মিয়া পেশায় রাজমিস্ত্রি শ্রমিক এবং মার রোকসানা বেগম গৃহিণী। তাদের সংসারে সিনহা নামে আরেক চার বছরের কণ্যা সন্তান রয়েছে। এই চারজনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি জুব্বার মিয়া। কিন্তু মহামারি করোনার লকডাউনে তাদের মনোবল অনেকটাই দূর্বল করে দিয়েছে। একদিকে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে অসুস্থ শিশু রোজা মনির চিকিৎসা খরচও দিনদিন বাড়ছে।
রোজা মনির বাবা জুব্বার মিয়া বলেন, গত বছর ধরে করোনা লকডাউনের কারণে আয় রোজগার একদম নেই। কিছু জমানো টাকা ছিল। তা দিয়ে মেয়েটার চিকিৎসা করেছি। দুই বছর বয়সে রোজা মনির ওজন ১০ কেজির বেশী থাকার কথা। এদিকে তার ওজন মাত্র ৬ কেজি। ডাক্তার বলেছেন তাকে দ্রত উন্নত চিকিৎসা না করালে সে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এখন কি করবো, কোথায় টাকা পাব ভেবে পাচ্ছি না। মেয়ের কষ্ট দেখলে আমার বুক ফেটে কান্না আসে।
রোজা মনির মা রোকসান আক্তার জানান, মেয়েটা আমার দিন দিন একদম শুকিয়ে যাচ্ছে। রোজা মনি সব সময় কান্নাকাটি করে, খেতে চায় না। তার শরীরে জ্বর থাকে। হাত পা বেশির ভাগ সময় বাঁকা করে রাখে। ঘাড় নিচু করে থাকে, অন্য সাধারন শিশুর মত রোজা মনি বসতে পারে না। হাটতে পারে বলতে পারে না কথাও। এখন চোঁখের সামনে মেয়ের এমন অবস্থা দেখে সহ্য করতে পারছি না। রোজা মনির বাবা দিন মজুর হিসেবে কাজ করেন। করোনায় আয় রোজগার একদম নেই। সংসারে ডাল ভাত খেলেও তো টাকা প্রয়োজন। দু বেলা দু মুঠো ভাত খেতেই পারি না। মেয়ের চিকিৎসা করাবো কি করে? ডাক্তার আসাদ বলেছেন রোজা মনিকে থেরাপি দিতে হবে। যেখানে প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে খরচ হবে। থেরাপি না দিতে পারলে রোজা মনি শারিরীক প্রতিবন্ধী হয়ে যাবে।
স্থানীয় এলাকাবাসী আব্দুল হাই বলেন, রোজা মনি শারিরীক ভাবে খুবই অসুস্থ। তার হাত পা দিন দিন চিকন হয়ে যাচ্ছে। বড় ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা না করালে হয়তো শিশুটার বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। এদিকে রোজা মনির চিকিৎসা না করাতে পেয়ে তার মা-বাবা সবসময় কান্নাকাটি করে।
শেরপুর পৌরসভার প্যানের মেয়র ২ এবং ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে যদি রোজা মনির পরিবার পৌরসভার মেয়র বরাবর আর্থিক সহযোগীতা চেয়ে একটি লিখিত আবেদন দেয়। তারপর আমরা হয়তো পৌরসভা থেকে তাকে কিছু আর্থিক সহযোগীতা করতে পারবো।
এ ব্যাপারে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, রোজা মনির জন্ম থেকে কিছু সমস্যা আছে। প্রসবের সময় হয়তো সে মস্তিষ্কে আঘাত পেয়েছে। তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাতে হবে। পাশাপাশি রোজা মনিকে কিছু শারিরীক ব্যায়াম ও প্রতিদিন থেরাপি দিতে হবে। নয়তো আস্তে আস্তে সে শারিরীক প্রতিবন্ধী হয়ে যাবে।