ডিভোর্স না নিয়ে অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে করা মামলায় ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মীসহ তিনজনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্য আসামি হলেন- তামিমার মা সুমি আক্তার।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকার অ্যাডিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিন মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। নাসিরের আইনজীবী অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। এছাড়া নাসিরসহ তিনজনের জামিন আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ২৪ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য করেন ও তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে নাসির মামলায় ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তার আবেদনটি নামঞ্জুর করেন। মামলার বাদী ও তামিমার প্রথম স্বামী ব্যবসায়ী মো. রাকিব হাসানের আইনজীবী ইশরাত জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ৩১ অক্টোবর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় তা বদলির আদেশ দেন।
তারও আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ক্রিকেটার নাসির হোসেন, তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা ও তামিমার মা সুমি আক্তারকে ৩১ অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে সমন জারি করা হয়। সেদিন নাসির ও তামিমার বিয়ে অবৈধ বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। নাসির-তামিমাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
এরপর মামলার বাদী ও তামিমার প্রথম স্বামী ব্যবসায়ী মো. রাকিব হাসানের পক্ষে তার আইনজীবী ইশরাত জাহান তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। আদালত তাদের ৩১ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাকিবকে তালাক দেননি তামিমা। আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিশও পাননি। তামিমা উল্টো জালিয়াতি করে তালাকের নোটিশ তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেওয়ায় তামিমা তাম্মী এখনো রাকিবের স্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন। দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তাম্মীর বিয়ে অবৈধ।
এই দুজনের পাশাপাশি অবৈধ বিয়েটিতে তামিমার মা সুমি আক্তারকেও দোষী বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ওই দিনই আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর শুনানি শেষে মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। চলতি বছরের (২০২১) ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্রপত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন। এরপর ডিভোর্স পেপার ছাড়াই বিয়ে করার অভিযোগে নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন রাকিব।
অভিযোগে আরও বলা হয়, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকা অবস্থায় নাসিরকে বিয়ে করেছেন তামিমা, যা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নাসির নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। তামিমা ও নাসিরের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার আট বছর বয়সী শিশুকন্যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। আসামিদের এ ধরনের কার্যকলাপে রাকিবের চরম মানহানি হয়েছে, যা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
#জাগো নিউজ