ময়মনসিংহের গফরগাঁও খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঁচ সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রহিমা খাতুন।
অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- সহকারী শিক্ষক মো. মাহমুদুর রহমান (মুকিম), মনিরুজ্জামান, খোরশেদুজ্জামান, মামুনুর রশিদ ও মো. কবির আহমেদ।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবিদুর রহমান জানান, শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে এই পাঁচ শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সুপারিশপত্র পঠানো হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্রীর অভিভাবক গফরগাঁও পৌরসভার কর আদায়কারী হাবিবুর রহমান গত ২৮ মার্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকা রহিমা খাতুনের (ভারপ্রাপ্ত) সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় প্রধান শিক্ষক ওই অভিভাবককে শিক্ষক মিলনায়তনের চেয়ারে বসতে বলেন। শিক্ষকদের চেয়ারে অভিভাবককে বসতে দেওয়া নিয়ে ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক মো. মাহমুদুর রহমানসহ (মুকিম) অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষক প্রধান শিক্ষক রহিমা খাতুনের (ভারপ্রাপ্ত) ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে সহকারী শিক্ষক মো. মাহমুদুর রহমান মুকিমের সহযোগিতায় ওই পাঁচ শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে মারপিট করতে উদ্যত হন এবং হত্যার হুমকি দেন।
এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান শিক্ষক রহিমা খাতুন (ভারপ্রাপ্ত) বাদী হয়ে পাঁচ শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত ২৯ মার্চ গফরগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এছাড়া ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সঠিক সময়ে ক্লাসে না আসা, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না করাসহ নানা অভিযোগে বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক রহিমা খাতুন (ভারপ্রাপ্ত)।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবিদুর রহমান অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকের কাছে সুপারিশপত্র পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক রহিমা খাতুন (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, সহকারী শিক্ষক মো. মাহমুদুর রহমান (মুকিম), মনিরুজ্জামান, খোরশেদুজ্জামান, মো. মামুনুর রশিদ ও মো. কবির আহমেদ যথাসময়ে স্কুলে আসেন না। বিদ্যালয়ে না এসে তারা প্রত্যেকে বাসায় প্রাইভেট পড়ানোয় ব্যস্ত থাকেন। আমি শিক্ষকদের আগমন প্রস্থান বিষয়টি নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি হাজিরা চালু করেছি। এতেই তারা আমার প্রতি আরও বেশি ক্ষুব্ধ হন। কারণ তারা যথাসময়ে বিদ্যালয়ে আসেন না।
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, আমার কাছে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রীরা অভিযোগ করেছে। ওই শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় পরীক্ষার খাতায় ভালো নাম্বার দেওয়া হয় না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. মাহমুদুর রহমান মুকিমসহ শিক্ষকদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রধান শিক্ষক রহিমা খাতুন (ভারপ্রাপ্ত) আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছেন। সরকারি বিধি মেনে যথাসময়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন বলে তারা জানান।
#যুগান্তর