ধান বেচলাম ৫০৩ টাকা মণ দরে। আর এক কেজি গরুর মাংস কিনলাম ৫৫০ টাকায়। হায়রে কপাল; এক মণ ধান বেচার টাকায় এক কেজি গরুর মাংসও কেনা যায় না। আর আবাদ করমু না, চাউল কিনে ভাত খামু। আজ বুধবার দুপুরে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর বাজার মাংসের দোকানে মাংস কেনা শেষে এভাবেই এ প্রতিবেদকের কাছে আক্ষেপ প্রকাশ করে কথাগুলো বলছিলেন কৃষক মো. ইসমাইল হোসেন।
বর্তমানে উপজেলাজুড়ে চলছে বোরো ধান কাটার উৎসব। ফলনও এবার মোটামুটি ভালো। তবে ধানের দাম নিয়ে অখুশি কৃষক। হাটে বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০৩ থেকে ৬১০ টাকা মণ দরে। অথচ এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৫২০ থেকে ৫৫০ টাকা। উপজেলার কমপক্ষে ১০ জন কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ধান ও মাংসের দামের বিষয়টি জানা যায়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বোরো মৌসুমে উপজেলার ১৪ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমি থেকে ৯২ হাজার ৭২৯ মে.টন চালের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
নয়াগাঁও গ্রামের কৃষক মো. লালন মিয়া বলেন, ৫০ শতক জমির ধান কাটতে শ্রমিককে দিতে হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ টাকা। সঙ্গে দুপুরের খাবার। এর আগে ধান চাষ ও সার বাবদ প্রায় ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মোটা ধান হওয়ায় হাটে এ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫১৫ টাকা মণ। তাতে ৩৩ মণ ধান বিক্রি করে পাওয়া যাবে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। যোগ-বিয়োগ করলে কিছুই লাভ হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, লাভ একটাই, একসঙ্গে কিছু টাকা পাওয়া যায়।
বাজারের দুজন মাংস ব্যবসায়ী বলেন, ধান কাটার মৌসুমে একটু গরুর গোশতের চাহিদা বাড়ে। এ ছাড়া গরুর দাম বেশি হওয়ায় এখন মাংসও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমরাও হতাশ। কৃষকেরা ধান বিক্রির সময় ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। তবে আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে কৃষক আশানুরূপ ফলন পাবেন।