আল্লাহ মেঘ দে পানি দে/ ছায়া দেরে তুই আল্লাহ মেঘ দে। এই গানের সুরে সুরে শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌরশহরের সেঁজুতি বিদ্যানিকেতনের শিশু শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা বৃষ্টির জন্য ব্যতিক্রমী এক বিশেষ প্রার্থনা করেছেন।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে শহরের সেঁজুতি বিদ্যানিকেতন প্রাঙ্গনে তপ্ত দাবদাহ থেকে বাঁচতে ও ফসলের মাঠ রক্ষার্থে এই বৃষ্টি বন্দনার আয়োজন করা হয়। এতে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা মাথায় বড় গাবলা নিয়ে ওই গাবলা চালনা দিয়ে ঢেকে পানি ছিটিয়ে দলবেঁধে নেচে নেচে লোকজ সংস্কৃতির জনপ্রিয় ওই বৃষ্টির গান ধরেন।
পানি ভর্তি বালতির চারপাশে হাঁটু গেঁড়ে বসে সারা শরীরে কাঁদা মেখে মাটি চাপড়ে দুই হাত আকাশের দিকে তুলে তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করেন।
এ বিষয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজের প্রভাষক স্বপ্না চক্রবর্তী  বলেন, দীর্ঘ একমাস যাবত নালিতাবাড়ীতে বৃষ্টি হচ্ছে না। তীব্র তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাই পূর্বপুরুষদের রীতি অনুযায়ী বৃষ্টির জন্য এই প্রার্থনা করা হয়। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি বৃষ্টির জন্য কাঁদা মেখে আল্লার কাছে বৃষ্টি চাওয়া হয় এই লোকজ সংস্কৃতির মাধ্যমে।
এখন স্মার্ট বাংলাদেশে এই লোকজ সংস্কৃতির বৃষ্টি বন্দনা উৎসব আর পালন করতে দেখা যায় না। কৃষি প্রধান এই বাংলায় তীব্র দাবদাহ আর অনাবৃষ্টিতে ফসলের মাঠ বিবর্ণ হয়ে উঠে। জলাশয় শুকিয়ে যায়। দীর্ঘদিনের অনাবৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির জন্য গ্রামের মানুষ নানা আচার অনুষ্ঠান পালন করে। তারই ধারাবাহিকতায় সেঁজুতি বিদ্যানিকেতন এই বৃষ্টি বন্দনার আয়োজন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বকুল, সেঁজুতি বিদ্যানিকেতনের প্রিন্সিপাল মুনীরুজ্জামান, শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম, নবরূপী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি জয়জিৎ দত্ত শ্যামল, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।