:সাবিনা সিদ্দিকী শিবা:
না না আজ আর কোন গল্প,জীবন কাহিনী লিখতে চাইনা।আমি বাকপটু মানুষ।মানুষের দুঃখ, কষ্টে আমার মন কচু পাতার ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মতো,চোখের জলে ছোটখাটো একটা পদ্মা নদী হয়ে যায়।বাট সেখানে কেউ একটা সেতু তৈরি করে দেয়না। আমি অতিক্ষুদ্র একজন মানুষ হিসেবে আমার আশা,আকাঙ্ক্ষা আকাশ ছোঁয়া। যাক যেটা বলতে চেয়েছিলাম। আসলে কি যেন বলতে চেয়েছি? ও হ্যাঁ মনে পরেছে ও-ই যে সেতু।
আমরা পদ্মা সেতু পেয়ে যারপরনাই খুশি হয়েছি, এখন আমাদের ভাবনার বিষয় সেতু কিভাবে রক্ষণাবেক্ষণা করবো?সেই চিন্তায় আমার ঘুম হারাম। সেতু দিয়ে ইতিমধ্যে অনেক কাজ হয়ে গেলো।কেউ একতাবদ্ধ হয়ে নামাজ কায়েম করলো,কোন মহিলা প্রথম বাইক চালিয়ে পার হলো,কেউ আবার টিকটিক করলো,কেউ আবার হিসু,করলো,আবার কেউ গোপনে নাট বল্টু খুলে ধোলাইখালের লক্ষক ঝক্কর এর দোকানে সাপ্লাই দিলো।কিন্তু সবচেয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে বাইক এক্সিডেনে দুইটি তরতাজা ছেলে মৃত্যু। আহা।কার না জানি বুক খালি করে চলে গিয়েছে ওরা না ফেরার দেশে।আল্লাহ পাক বেহেস্ত দান করুক।
তবে আমি কিন্তু সেতুর ওপারের মানুষ হিসেবে লঞ্চেই প্রধান্য দিবো,এই লঞ্চ বা ফেরি আমার ভালোবাসার পুরো না হলেও আংশিক ক্ষণের মধ্যে একটি প্রকল্প হিসেবে গণ্য। আহা! কি মধুময় ছিলো সেই নব্বই দশকে পশ্চিমা প্রেমের টান।যে টানের জন্য কতনা অসুস্থতা ভান করেছি।যা বলে শেষ করা যাবেনা।শহরে এতো টাটকা ঘ্রাণের ঠান্ডা খাবার পাওয়া মুসকিল। আর সেই মুসকিল আসান করার জন্য আমাকে ছুটতে হতো,শরীয়তপুরের নানা বাড়ি।আসলে খাবার ছিলো উসিলা মাত্র। মুল ছিলো প্রেমের টান। সে টানে লাইলি মজনু,রোমিও জুলিয়েট মজে ছিলো। এতো সহজে কেউ কাউকে দেখা যেতনা।কিন্তু ঢাকা শহরে থাকলেও মনটা পরে থাকতো গ্রামে,অর্থাৎ পদ্মা সেতু ওপারে। হায়রে সেতু! তুই আরও আগে এলে আর আমাদের জুটি ভাঙ্গন ধরতো না।
একদা জন্ডিস ধরা পরে আমার আহা! সেকি কষ্ট। আমার নয় ভালোবাসার মানুষটির।নাওয়া খাওয়া ছেড়েই দিলো বেচারা।শুরু হলো মাকে পটানো।গ্রামের সব বিশুদ্ধ টাটকা খাবার খেলে জন্ডিস বাপ বাপ করে পালাবে।সম্পর্কে কাজিন হওয়ায়।আর যাই হোক তার দাবি পরিপূর্ণ মানা হলো।পাঠিয়ে দেয়া হলো পদ্মা সেতুর ওপারের।  ডাব,কচি শসা,খিরাই কিছু বাদ নেই।কিনে খাওয়ার চেয়ে আসে পাশের গাছ থেকে হাত সাফাই করাই বেশি। ছিলো রমজানের মাস।ফজরের নামাজ পড়ে বন্ধুদের নিয়ে নামতো চুরির মিশনে।  ৯০ দশকের সময় কেউ এটা চুরি বলতোনা।এটা হলো প্রতিবেশীর হক।কেউ কিছু মনে করতোনা।কার কার বাসায় মেহমান এলে নিজেদের খোয়ারের পালা মুরগীও দিয়ে দিতো অতিথিদের খাওয়াতে।গাছের ফলতো দিতই।ধামা ভরে মুড়িও গুড়ও দিয়ে যেতো।কোথায় সে সব দিন? এখন সেতু তৈরি হয়েছে।জুটি ভেঙ্গেছে কি হয়েছে।সেতু তো ভাঙতে পারেনি।আবার যাওয়া হবে সেতুর উপর দিয়ে ইনশাআল্লাহ !