মঙ্গলবার , ১৮ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - বর্ষাকাল || ১১ই জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি

ইতিহাসের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে প্রিয় বাংলাদেশ

প্রকাশিত হয়েছে -


দেশে করোনার মহামারির প্রকোপের মাঝেই আরেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রলয়ঙ্করী ঘৃর্ণিঝড় “আম্ফান” আঘাত হেনেছে।

আম্ফাণের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলসহ যেসকল জেলার উপর দিয়ে ঘুর্ণিঝড়টি বয়ে যাবে তাতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশের ইতিহাসে এ এক মহাক্রান্তিকাল। করোনার পরিস্থিতির পিক সময়ে এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রিয় বাংলাদেশটিকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।

Advertisements

ঘুর্ণিঝড়ের তান্ডবলীলা কতটা ক্ষতি করবে তা হয়তো দ্রুতই কিছুটা আঁচ করা যাবে। সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি ও আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে তুলনামূলকভাবে পূর্বের তুলনায় ক্ষয়ক্ষতি কম হবে বলেই বিশ্বাস করি। বিশেষ করে প্রাণহানির পরিমাণ যতটা কম হবে ততটাই মঙ্গলজনক। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকার প্রায় ২১ লক্ষ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া সম্ভব হয়েছে। যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ও ইতিবাচক একটি দিক।

ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ লোকদের মাঝে দ্রুততর সময়ে মানবিক সহায়তা (ত্রাণ) পৌঁছানোটা প্রধান ও বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে সরকারিভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা, নোনা পানির কুপ্রভাব থেকে ফসলি জমি রক্ষা করা, আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করাসহ কত শত কাজ যে একটি দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে করতে হয় তা অকল্পনীয়। আশা করি পূর্বের ন্যায় এবারো সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা/সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসবেন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে।

ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে এবার বাড়তি একটা চ্যালেঞ্জ যোগ হয়েছে বর্তমান করোনা (কোভিড-১৯) ভাইরাস পরিস্থিতি। করোনা পরিস্থিতিতে বর্তমানে দেশ প্রায় পিক টাইম পার করছে। প্রতিদিন হাজারেরও বেশি শনাক্ত হচ্ছে। মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েই চলছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বারবার স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য জোর দিচ্ছে ও বারবার দেশের মানুষকে সতর্ক করছে। আশঙ্কার কথা হলো প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাত থেকে রক্ষা করতে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ঠাঁই নেয়া লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব কতটুকু মেনে চলা সম্ভব হবে। বিষয়টি সত্যিই ভাববার।

প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় “আম্ফান” তার তান্ডব চালিয়ে চলে যাবে। এই তান্ডবের ফলে যেমন জানমালের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে ব্যাপক তেমনি এর প্রভাবে ঐ অঞ্চলগুলোতে করোনা পরিস্থিতির অবনতির হবার সম্ভাবনাও কিন্তু উড়িয়ে দেয়া যায় না।

আম্ফান কেটে গেলে এই দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় যেমন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে সেই সাথে এসব লোকজনদের স্বাস্থ্যের প্রতিও বিশেষ নজর রাখতে হবে।

সবমিলিয়ে প্রিয় দেশটি এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির মুখোমুখি। সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই আমাদের সহায় হবেন। “করোনা”ও “আম্ফান” কেটে যাক দ্রুত। ভালো থাকুক বাংলাদেশ। ভালো থাকুক মানুষ ও প্রকৃতি।

আবদুর রহমান রানা
সিএ কাম ইউডিএ
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, শেরপুর
ইমেইল : arana459@gmail.com