শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে জুয়া খেলার বিজয়ী জুয়াড়ি আব্দুর রহমানকে ভবন থেকে ফেলে হত্যার করে পরাজিত জুয়াড়ি মোকছেদুর রহমান। জুয়া খেলায় খোয়ানো টাকা ফেরত না দেয়ায় এমনটি ঘটানো হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শেরপুরের জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিতে এসব তথ্য দেয় অভিযুক্ত তিন জুয়াড়ি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ওসি বছির আহমেদ বাদল জানান, মরিচপুরান গ্রামের টেকনিক্যাল স্কুলের একটি ভবন নির্মাণ হচ্ছে। সেই ভবনের চারতলা ছাদে ১ ডিসেম্বর রাতে জুয়া খেলতে বসে ভবনের শ্রমিক ও ওই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুর রহমান, আমজাদ আলীর ছেলে সুজন, পাশের পিছলাকুড়ি গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে সিদ্দিক ও ওই ভবনেই থাকা জামালপুরের মেলান্দহের টনকি শেখপাড়ার ছাবের আলীর ছেলে মোকছেদুর রহমান। খেলায় একে একে তিনজনই আব্দুর রহমানের কাছে হেরে যান।
এরপর জুয়ায় বিজয়ী আব্দুর রহমানের স্ত্রী মোবাইলে কলে স্বামীকে বাড়িতে ফিরতে বলে। ওই সময় জুয়ার বিজয়ীর কাছে আগের দিন খোয়ানো ২০০ টাকা দাবি করেন শ্রমিক মোকছেদুর রহমান। পরদিন দেবে বলে জোর করে খেলা ছেড়ে উঠে সিঁড়িতে চলে আসে আব্দুর রহমান। এতে রাগে পেছন দিক থেকে তাকে ধাক্কা দেয় মোকছেদুর। এ ধাক্কা খেয়ে ভবন থেকে ছিটকে নিচে পড়ে গিয়ে প্রাণ হারান শ্রমিক আব্দুর রহমান। পরে মোকছেদুর, সঙ্গীয় সিদ্দিক ও সুজন নিচে নেমে মরদেহ দেখেন। পরে মরদেহটি ধান ক্ষেতের আইলে ফেলে আসে তারা।
ওসি আরো জানান, ২ ডিসেম্বর সকালে আব্দুর রহমানের মরদেহ পরে থাকতে দেখে এলাকাবাসী থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরে নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজিজুল হক আজি নামের একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
ওসি জানান, মামলার তদন্তের সময় মোবাইল কলের সূত্র ধরে ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রথমে সন্দেহজনকভাবে সিদ্দিককে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তিতে অপর সহযোগী সুজনকে নিজ বাড়ি ও হত্যাকারী মোকছেদুরকে ওই ভবন থেকে রাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার পুরো ঘটনা স্বীকার করে তারা।