গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানছে না এই সরকার। কারণ, এরা ভালো করেই জানে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তাই প্রশাসনে দলীয়করণ করে তাদের দিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়াচ্ছে, বিরোধী দলসমূহের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে, মামলা দিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। হামলা-মামলা করে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের একদফার আন্দোলন থেকে দূরে রাখা যাবে না। সরকারের পতন ব্যতীত আমরা রাজপথ থেকে ঘরে ফিরব না।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা মিছিলপূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। একদফার যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের (নুর) উদ্যোগে এই কর্মসূচি হয়।
নুরুল হক নুর বলেন, এই সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রশাসনে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাদের বিভিন্ন পদে চাকরি দিয়েছে। দেশের মানুষের সেবা করা নয়, প্রশাসনের এই দুর্বৃত্তদের কাজ হচ্ছে বিরোধী মত নির্মূল করা, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো আর টাকা-পয়সা উপার্জনে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি করা।
তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম একদিন পরপর বাড়ছে। ব্যাংকগুলো থেকে অনিয়ম করে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে দরবেশরা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সরকারকে দিচ্ছে, দেশ থেকে ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে। যার ফলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, টাকার মান কমছে। জিনিসপত্রের দাম একের পর এক বাড়ছে। এ সরকারের পতন না হলে কারো রক্ষা নেই।
তিনি আরও বলেন, সরকার একঘেয়েমি করে নির্বাচন করলে স্যাংশনের কালো মেঘে তাদের ঢেকে দেবে। যা দেশে বিপর্যয় ডেকে আনবে। তাই দেশ বাঁচাতে সকলকে রাস্তায় নেমে গণআন্দোলন গড়ে এই সরকারকে বিদায় দিতে হবে।
এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে বেপরোয়া আচরণ শুরু করেছে। ভিন্নমতের মানুষের বুকে গুলি করছে, রাতের বেলা ঘর থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। সন্তানের লেখার জন্য মাকে জঙ্গি বানানোর নাটক করছে। আমেরিকা, ইউরোপ, ভারতকে ভুল বোঝাতে জঙ্গি নাটক সাজাচ্ছে। অথচ আওয়ামী লীগইতো জঙ্গি। তারা মানুষকে গুম-খুন করছে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এসব করে আজকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। আগামীতে এদের ‘১৪ ও ‘১৮ মার্কা নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশে নির্বাচন হবে জনগণের সিদ্ধান্তে। এখানে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে হবে। তবে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে আমেরিকা-ইউরোপের মতো যারা জনগণের পাশে থাকবে, তাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সহযোগিতায় ব্রিকসে ঢুকতে হোঁচট খেয়েছে। এভাবে আগামী নির্বাচনেও তারা হোঁচট খাবে। পুরো আন্তর্জাতিক মহল এই সরকারকে বর্জন করেছে। জনগণের মুখেও স্লোগান শুরু হয়েছে- দফা এক, দাবি এক- ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ। সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলেও জানান তিনি।
পরে গণঅধিকার পরিষদের কালোপতাকা মিছিল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর পানিরট্যাংকি, পল্টন মোড়, বায়তুল মোকাররম, দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে পুনরায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।