বাম্পার ফলনেও হাসি নেই শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার চিচিঙ্গা চাষিদের মুখে। হাটবাজারে প্রতি মণ চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ২০০-৩০০ টাকায়। হাড়ভাঙা পরিশ্রম আর পুঁজি খাটানোর পর উৎপাদন খরচ উঠানোই দায় হয়ে উঠেছে কৃষকদের। তাই সঠিক দাম না পাওয়ায় হাসি নেই চাষীদের মুখে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সুরিহাড়া, পাগলারমুখ, বনগাঁও,বগাডুবি,কালিনগর,কোণাগাঁও, গৌরিপুর, নলকুড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে চিচিঙ্গার আবাদ করেন কৃষকরা। নিজেদের এলাকার চাহিদা মেটিয়ে এ চিচিঙ্গা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চিচিঙ্গার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে সঠিক দাম না পাওয়ায় হাসি নেই কৃষকের মুখে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে প্রায় ২৫একর জমিতে চিচিঙ্গার আবাদ হয়েছে। উপজেলার প্রায় ৪টি ইউনিয়নে কম-বেশি চিচিঙ্গার আবাদ হয়। তবে সদর ইউনিয়নে সিংহভাগ চিচিঙ্গার চাষ হয়ে থাকে।
উপজেলার বগাডুবি ব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ৮ জন কৃষক পাইকারী ক্রেতাদের কাছে চিচিঙ্গা বিক্রি করতে এসেছে। কিন্তু ঢাকার কাওরান বাজারে চিঙ্গিার দাম কম থাকায় ২০০টাকা মণ দরে দাম করছে পাইকারী ক্রেতা মো. মুজাম উদ্দিন (৩৫)। পাইকারী ক্রেতাদের সাথে দাম কষাকষির এক পর্যায়ে ২৫০ টাকা মণ ধরে বিক্রি করেন কৃষকরা।
পাইকারী ক্রেতা মো. মুজাম উদ্দিন জানান, ঢাকার কাওরান বাজারে চিঙ্গিার দাম নেই বললেই চলে। প্রতি মণ সাড়ে ৩’শ টাকা মণ বিক্রি করা যাবে। গাড়ি ভাড়া অন্যান্য খরচ শেষে আমাদের লাভ খুব একটা এখন আর থাকে না। তবে গত বছর চিচিঙ্গা কিনে বিক্রি করে প্রচুর লাভ হয়ছে। কারণ প্রতি মণের দাম ছিল ১২০০-১৩০০ টাকা ও চাহিদাও ছিল বেশি।
উপজেলার সুরিহাড়া গ্রামের কুষক মো. আবু হাশেম বলেন, গত বছর সাড়ে ৪ কাঠা (২২.৫শতাংশ) জমিতে চিচিঙ্গা আবাদ করে প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভ করে ছিলাম। ওই লাভের আশার এবারও ৩০ হাজার টাকা খরচ করে আবাদ করেছি। কিন্তু বিক্রি করছি মাত্র ৯ হাজার টাকা। নিজের পরিশ্রম আর খরচের টাকাই তুলতে পারবো না এবার।
কৃষক মো. আফসার উদ্দিন বলেন, গত বছর ১২০০ টাকা মণ মাল (চিচিঙ্গা) বিক্রি করছি। আর এবার মাল (চিচিঙ্গা) নেয় না। ৪ কাঠা জমিতে আবাদ করতে খরচ হয়ছে ২৪ হাজার টাকা। বিক্রি করছি ৭ হাজার টাকা। আর বিক্রির সম্ভাবনা নাই। ২দিনের শিলাবৃষ্টিতে সব শ্যাষ, এবার সর্বনাশ।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চিচিঙ্গার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে গেছে। তবে বাজারে চাহিদা বাড়লে দামও বাড়বে।