বাংলাদেশে ১৯৮৮ সালের পর এবারের বন্যা সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের (ওসিএইচএ) পক্ষ থেকে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়।
সংস্থাটির নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলা হয়, আগামী মাসের আগেই পানি কমতে শুরু করবে এমন সম্ভাবনা কম। বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশের ১৮টি জেলায় ২৪ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়ে সরকারি আশ্রয়শিবিরে থাকছে ৫৬ হাজার মানুষ। বন্যার কারণে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫৪ জনের।
এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ বাড়িঘর ডুবে গেছে। বাঁধ ও বাঁধের মতো সুরক্ষা অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘ এবং মানবিক অংশীদাররা জরুরি খাবারের প্যাকেট, পানি পরিশোধন সুবিধা, স্বাস্থ্যবিধি ও ডিগনিটি কিট এবং জরুরি আশ্রয়ের
মতো বিষয়গুলোয় সরকারের প্রচেষ্টায় সমর্থন দিচ্ছে। সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য ইতোমধ্যে ইউএন সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড প্রাথমিকভাবে ৫ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের তহবিল দিয়েছে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২১ জুলাই পর্যন্ত দেশের ২০টি জেলার ৯৮ উপজেলার ৬০৩ ইউনিয়ন বন্যা উপদ্রুত। জেলাগুলো হচ্ছে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, রংপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, জামালপুর, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, ফেনী, শরীয়তপুর, ঢাকা ও নওগাঁ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন সংবাদমাধ্যমকে জানান, ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হচ্ছে। এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। আমরা প্রতিদিন অল্প অল্প করে হিসাব করছি। প্রতিদিন সেটি আপডেট করা হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ের বন্যায় প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, এই ক্ষতি কমিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।