বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, দেশের মানুষকে একবার ভোট দেয়ার সুযোগ দেন। মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে আওয়ামী লীগের খবরই থাকবে না।
শনিবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে লেবার পার্টি আয়োজিড প্রতিহিংসার রজনীতি: জাতীয় নির্বাচন ও বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক আলোচনা সভায় মওদুদ আহমেদ বলেন, আপনারা চান খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করতে। কিন্তু এ সুযোগ দেশের মানুষ আর আপনাদোর দিবে না। জনগণকে ভোট দেয়ার সুযোগ দিন তাহলে দেখবেন আপনাদের কি অবস্থা হয়। মানুষ ভোট দিতে পারলে আওয়ামী লীগকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। মানুষ বিএনপিকে ভোট দিয়ে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী বানাবে।
তিনি বলেন, আপনারা মনে করেছেন বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন করবেন? কিন্তু সে আশা কখনও পূরণ হবে না। বেগম জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না হতে দেয়া হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা সরকারি খরচে নৌকায় ভোট চাইবেন আর আমাদের নেত্রীকে কারাগারে রাখবেন তা হবে না। আপনি সরকারি খরচে নৌকার প্রচারণা চালাবেন আর আমাদের কোনো সুযোগ দিবেন না। সভা সমাবেশে গিয়ে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিবেন। নির্বাচন আইনে আছে তফসিল ঘোষণার পর কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে না। তাই শেখ হাসিনা এখন জনসভা করে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এটি জনগণের সাথে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু না।
বিএনপির এ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরেকটু সংযত হলে দেশকে আরো এগিয়ে নেওয়া যেত। দেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত করা যেত। তার সামনে সুযোগ ছিলো বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কপালে যে কালিমা লেপন হয়েছে তা মুছে ফেলার। কিন্তু তিনও সেটা না করে করলেন উল্টোটা। তিনি চাইলে পারতেন মানুষের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র সুসংহত করতে। কিন্তু শেখ হাসিন সেটা না করে করলেন একদলীয় শাসন কায়েম।
তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ৩ মাসের মাঝে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ভিসি নিয়োগ করেছে। শিক্ষক প্রক্টর, হল প্রোভেস্ট, শিক্ষক নিয়োগ করে শিক্ষাব্যবস্থায়ও দলীয় করণ করেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নকলের প্রচলন আবারও ফিরিয়ে এনেছে।
মওদুদ বলেন, শিক্ষাব্যবস্থায় এমন বেহাল দশার কারণে অন্য কোনো দেশ হলে সরকার পদত্যাগ করতো। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্লজ্জের মত বলে অতীতেও এমন হয়েছে। কিন্তু এটি মিথ্যা কথা, আওয়ামী লীগ আমলেই প্রশ্ন ফাঁস ও নকলের ব্যবস্থা প্রচলন হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ভালো মানুষ কিন্তু তিনি ব্যর্থ। তার দলের লোকেরাও সংসদে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, আগামী নির্বাচবনে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে কোনো শ্লোগান দরকার হবে না। খালেদা জিয়া আমাদের সাথে থাকবেন আর শ্লোগান হবে ৭০ টাকা ধরে চাল খাব না নৌকায় ভোট দিব না, ১৫০ টাকায় পেঁয়াজ খাব না নৌকায় ভোট দিব না।
লেবার পার্টির সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, ব্যারিস্টার মীর নাসির, বরকত উল্লাহ বুলু, বাবু নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ।