অনলাইনে আচার বিক্রি! বিষয়টা কয়েক বছর আগেও বেশ চমকে দেয়ার মতো ঘটনা ছিলো। কিন্তুসময় এখন পাল্টেছে। ব্যস্ততার কারণে যারা ঘরে আচার বানাতে পারেন না, তারা সহজেই ঘরে বসে অর্ডার করে পাচ্ছেন ভিন্ন স্বাদের মুখরোচক আচার। আর এই আচার তৈরী করে অনলাইনে বিক্রি করে ইতোমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছেন শেরপুরের নারী উদ্যোক্তা আছিয়া খাতুন।
শেরপুর পৌর শহরের সজবরখিলা এলাকার সরকারী চাকুরীজীবী আইয়্যুব আলীর দ্বিতীয় সন্তান আছিয়া। ২০১৬ সাল থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে আচার বিক্রি করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। বর্তমানে স্নাতকোত্তর শেষ করে অবসরে নিজের পছন্দের আচার বিক্রি করে আয় করছেন তিনি। অনলাইন ভিত্তিক তার প্রতিষ্ঠানের নাম ফোড়ন বিডি। ফেসবুক পেজ ও ই-কমার্সের মাধ্যমে ইতেমাধ্যে দেশের বাইরেও তার ক্রেতা তৈরী হয়েছে।
আছিয়া বলেন, ঘরে বসে অবসরে শখ করেই শুরু করা হয় আচার তৈরীর কাজ। এরপর ফেসবুকে পেজ খুলে তাতে ছবি তুলে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিক্রি শুরু হয়। যারা আচার খেতে পছন্দ করেন কিন্তু ব্যস্ততার কারণে সিজনাল আচারগুলোও বানাতে পারেন না, তারাই মূলত আমার নিয়মিত ক্রেতা। এছাড়া সিজনাল আচারের বাইরেও আপেল, রসুন, কাঁচামরিচ ও আলু বোখারার আচারগুলো ব্যস্ততার কারণে অনেকেই বানাতে পারেন না। তারাও নিয়মিত এই আচারগুলো অর্ডার করেন।
তিনি আরো বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারে নারীদের কাজে বড় প্রতিবন্ধকতা পরিবার ও অর্থ। এছাড়া জেলা পর্যায়ে এখনো নারীদের জন্য সুরক্ষিত কর্মপরিবেশ গড়ে ওঠেনি। এরপরও যারা লেগে থাকে এবং চেষ্টা চালিয়ে যায়, তারাই এক সময় সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।
ফোড়ন বিডিতে ২৫০গ্রাম, ৫০০গ্রাম ও কেজি তিনটি ভিন্ন ওজনে অর্ডার করা যায়। নিজের চাহিদামতো ঝাল, টক ও মিষ্টির পরিমাণ কমিয়ে ও বাড়িয়ে অর্ডার করা সম্ভব ফোড়ন বিডির ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। গ্রাহকের চাহিদামতো ঝাল, টক ও মিষ্টির পরিমাণ দেয়ার কারণে গ্রাহকের কাছে বেশ সাড়া ফেলেছে ফোড়ন বিডি।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী আছিয়া বলেন, মানুষ চাইলে সবই সম্ভব। ঘরে বসে নারীদের কাজের সুযোগ এখন অনেক। শুধু চেষ্টা নিয়ে শুরু করতে হবে। পরিবারের সহযোগিতা থাকলে খুব দ্রুত নারীদের অনলাইন ব্যবসা দ্রুত সফল হতে পারে। তবে অবশ্যই ধৈর্য ও একাগ্রতা নিয়ে লেগে থাকতে হবে। বাঁধা আসলেও ভয় পেয়ে পিছনে ফেরা যাবে না।
আছিয়া বর্তমানে স্নাতকোত্তর শেষ করে অনলাইন ব্যবসার পাশাপাশি ব্র্যাকের একটি প্রকল্পে নারী কর্মীদের প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। নারী দিবসে হার না মানা আছিয়ার প্রতি রইলো শুভ কামনা।