আব্দুর রশিদ নামে এক কৃষক বলেন এই বন্যহাতির পালের জন্য একমুঠো ধানও গোলায় তুলবার পারছিনা, হাতিরপাল ফসলের মাঠ শূণ্য করে দিছে। এহন আইছে সরিষা ও বোরো ধানের বীজতলা খাইতে। হাতির হাত থাইকা ফসল ও জান বাঁচাইতে আমরা দল বেঁধে হাতি তাড়াতে পাহাড়ায় থাকি।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ি এলাকায় বন্যহাতির মহড়া চলছেই। কিছুতেই দমানো যাচ্ছে না হাতির দলটিকে। মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারি) বিকেলে খাবারের সন্ধানে গহিণ পাহাড় থেকে নেমে আসে উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা পাহাড়ি এলাকায়।
জানা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী পানিহাটা এলাকার পাহাড়ে প্রায় ৪০/৫০টি বন্যহাতি দলবেঁধে পাহাড়ে অবস্থান করছে। তারা যে কোন সময় লোকালয়ে তান্ডব চালাতে পারে। তাই পাহাড়ি এলাকার মানুষ বন্যহাতির তান্ডব থেকে বাঁচতে চিৎকার হৈ-হোল্লোর করে রাত কাটাচ্ছে। নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ে সামাজিক বনায়ন করায় পর্যাপ্ত খাদ্য না থাকাতে ক্ষুধার্ত হাতির দল যখন রাগান্বিত হয়ে তেড়ে আসে তখন সাধারণ মানুষ পিছিয়ে যায়। এরা মাঝে মধ্যেই পাহাড়ি এলাকায় মহড়া দিচ্ছে।
সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকার বিজার কুবি, আশালতা নেংমিনজা, ডেবিট নকরেক ও হাসমত আলিসহ কয়েক জন কৃষক জানান, পাহাড়ি বন্যহাতির জন্য কোনো বছর ঠিক মতো ফসল তুলতে পারিনা। খাদ্যের সন্ধানে হাতিগুলো ফসলের ক্ষেতে ও লোকালয়ে এসে ছোটাছুটি করে খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে দেয়। আমরা বন্যহাতির অত্যাচারে অতিষ্ট। বন্যহাতির তান্ডবে আমাদের নির্ঘুম রাত কাটে।
ওই এলাকার এলিফেন্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি যোসেফ মারাক বলেন, হাতিগুলো পাহাড় থেকে দলবেঁধে লোকালয়ে নেমে আসলে রাত জেগে পাহাড়া দিয়েও জানমাল রক্ষা করা সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে শেরপুর বন বিভাগের বন্যপ্রাণি ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার জানান, বন্যহাতির আক্রমন থেকে জানমাল বাঁচাতে আমরা সচেতন আছি। নিয়মিত টহল ও জন সচেতনতামুলক আলোচনা সভা করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, হাতি প্রবন এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণকে হাতির আক্রমন ঠেকাতে বন্যহাতির দলকে উত্যক্ত না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।