প্রায় ২০০ বছর আগে নির্মিত আলহাজ মরহুম ফরমান আলী সরকার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে এখনও। তিন গম্বুজবিশিষ্ট নিখুঁত কারুকার্যের এই মসজিদটি আলহাজ মরহুম ফরমান আলীর একক চেষ্টায় নির্মিত হয়।
জানা যায়, এটি নির্মাণে তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের কলকাতা থেকে শ্রমিক এনে বেশ কয়েক বছরে শেষ করা হয়েছিল।
এর বাইরের এবং ভেতরের নিখুঁত কারুকার্যগুলো যে কোনো মানুষের দৃষ্টি কাড়ে।
ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নে ত্রিশাল-বালিপাড়া রোডের পাশে নির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী দেখতে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে।
আলহাজ ফরমান আলী ছিলেন একজন সম্ভ্রান্ত মুসলিম। ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি অগাধ আস্হা ও বিশ্বাসের কারণে অত্যন্ত ভালোবাসায় অনেক টাকা খরচ করে এর নির্মাণ কাজ শেষ করেন।
তিনি শুধু এই মসজিদ নির্মাণ করেই থেমে যাননি, আজীবনের জন্য এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তুলে নেন নিজের কাঁধে। তার জীবদ্দশার পরও যেন এই মসজিদ পরিচালনায় কারও আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন না পড়ে, সেজন্য প্রায় সাড়ে চার একর আবাদি জমি মসজিদের নামে লিখে দিয়ে যান।
মসজিদটি মুতাওয়াল্লির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত মুতাওয়াল্লি শাহজাহান সরকার বলেন, ইসলামের বিকাশ এবং ধর্মীয় রীতিনীতি পালনে আলহাজ মরহুম ফরমান আলী সরকারের অবদান অপরিসীম। তার একক প্রচেষ্টায় প্রায় ২০০ বছর আগে চুন, সুরকির গাঁথনি দ্বারা এই অপূর্ব কারুকার্যের মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। মসজিদের নামে তার দেয়া জমির ফসল থেকেই একজন ইমাম, একজন খতিব ও একজন মোয়াজ্জিনসহ যাবতীয় খরচ বহন করা হয়।
মসজিদের ভেতরে তিনটি মেহরাব রয়েছে। এর মধ্যে মাঝখানেরটি ইমামের জন্য। দুই পাশের দুইটি সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য। এই মেহরাবগুলো দেয়ালের ভেতরের অংশেই নির্মাণ করা হয়েছে। সেজন্য বাইরের অংশে মেহরাবের কোনো চিহ্ন খোঁজে পাওয়া যাবে না। মেহরাবের জন্য মসজিদের পশ্চিম পার্শের দেয়াল প্রায় তিন ফুট প্রশস্ত করে নির্মাণ করা হয়েছে।
এটি ২০০ বছর আগে নির্মাণ করা হলেও এর মূল অংশের এখনও সংস্কারের প্রয়োজন পড়েনি।
ঢাকাটাইমস