নামাজের কাতার সোজা করতে বলায় ইমামকে পানিতে চুবাতে চাওয়া বহুল আলোচিত কুমিল্লার লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফোরকান এলাহী অনুপমকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় বদলি করা হয়েছে।
রোববার (২২ অক্টোবর) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারারের কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ শামীম আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলি করা হয়।
আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে। এতে লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফোরকান এলাহী অনুপমকে রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলায় বদলির কথা উল্লেখ করা হয়। তার স্থলে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌমিতা দাশকে লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফোরকান এলাহী অনুপমকে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে বদলি করা হতে পারে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কী কারণে বদলি করেছে, সেটা আমার জানা নেই।
গত ১৩ অক্টোবর জুমার নামাজের সময় কাতার সোজা করতে ইউএনও ফোরকান এলাহী অনুপমকে গায়ে হাত দিয়ে সরিয়ে কাতার সোজা করেন লালমাই উপজেলার ভাটরা কাছারী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল বাসার। পরে নামাজ থেকে বের হয়ে ইমাম জানতে পারেন যে তিনি লালমাই উপজেলার ইউএনও। বিষয়টি জেনে তিনি ইউএনও ফোরকান এলাহী অনুপমকে বলেন, স্যার আমি আপনাকে চিনতে পারিনি। ক্ষমা করে দেন। এতে ইউএনও ক্ষিপ্ত হয়ে রাগ ঝেড়ে বলেন, আপনি কত বড় ইমাম হয়েছেন তা এখনই বুঝবেন। আপনাকে এখন পানিতে চুবাবো। আপনার ইন্টারভিউ হবে, আপনি কীভাবে ইমাম হলেন তা জানব ইত্যাদি বলে- উদ্ভট প্রশ্ন করতে থাকেন। ঘটনাস্থলে থাকা জহির নামের একজন সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠেন, আপনার আর এই মসজিদে নামাজ পড়ানোর দরকার নেই। এখন থেকে এই মসজিদে আপনার চাকরি নেই।
বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন শনিবার (১৪ অক্টোবর) দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়। পরদিন রোববার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমানের মধ্যস্থতায় ইউএনও ও ইমামের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের মীমাংসা হয়। এসময় ইমামের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন ইউএনও ফোরকান এলাহী অনুপম।
#ঢাকা পোস্ট