সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
আজ বুধবার (১৭ জুলাই) ১৫তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরায় ফেনীর আদালতে নুসরাত হত্যা মামলার সাক্ষি ও মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক খুজিস্তা খানম বলেন, সোনাগাজী মাদ্রাসার সুন্দরী, গরীব ও অপেক্ষাকৃত কম মেধাবী মেয়েদের টার্গেট করতেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা। উপবৃত্তির টাকা ও পরীক্ষার প্রশ্ন দেবেন বলে তাদের নিজের কাছে টানার চেষ্টা করতেন। ছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষের পাশেই নিজের কক্ষ করেছিলেন, যাতে তাদের দেখতে পারেন।
ওই কক্ষে বসেই বিভিন্ন ছাত্রীর শ্লীলতাহানী করতেন সিরাজ উদদৌলার। ২০০০ সালে মাদ্রাসায় যোগদানের পর বহু শিক্ষার্থীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে কেউ তাকে কিছু বলতে পারতেন না।
খুজিস্তা জানান, ছাত্রীদের সঙ্গে ন্যক্কারজনক এসব ঘটনা থামাতে তিনি কয়েকবার সিরাজ উদদৌলাকে বলেছিলেন। উল্টো হেনস্তা হতে হয় তাকে। তিনি বলেন, ‘অনেক ছাত্রী নির্যাতনের শিকার হলেও আমাদের মুখ বুঝে থাকতে হতো।
তিনি আরও বলেন, ‘মাদ্রাসার সাইক্লোন শ্লেটারের দোতলায় ছাত্রীদের সঙ্গে অপকর্ম করার জন্য অধক্ষ্য একটি অফিস করেছিলেন। সেখানে তিনি ছাত্রীদের ডাকলে আমরা শিক্ষকরা তাদের একা যেতে নিষেধ করতাম। ২-৩ জন দলবদ্ধ হয়ে যেতে বলতাম। কিন্তু তারপরও ছাত্রীদের একা সেখানে ডেকে নিয়ে যেতেন সিরাজ উদদৌলা।’
খুজিস্তার সাক্ষ্যগ্রহণের পর আজ বুধবার ১৫তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। ফেনীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আজ ৪ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ।
এর আগে সোনাগাজী মাদ্রাসার আয়া বেবী রাণী দাস, সহপাঠী আকলিমা আক্তার ও কায়সার মাহমুদ সাক্ষ্য প্রদান করেন।