বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়নের বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের মধ্যবর্তী ঘুমধুম সীমান্তের তুমব্রু কোনার পাড়ার শুন্য রেখায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অন্যত্র চলে যেতে মাইকিং করছে ওপারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশ। ফলে সীমান্তের শুন্য রেখায় বস্তি করে থাকা রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় গ্রাম বাসীদের মাঝেও আতংক দেখা দিয়েছে।
দুই পারেই উত্তেজনা আর উত্তাপ লক্ষ্য করা গেছে। ওপারে মিয়ানমারের সৈন্যরা বিপুল ভারি অস্ত্র সহ স্বশস্ত্র অবস্থান নিয়েছে। আর বাংলাদেশ সিমান্তে বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) সর্তক অবস্থানে রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শুন্যরেখায় শিবির করে থাকা রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য মিয়ানমারের সেনাদের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ইতিপূর্বে কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা। রোহিঙ্গা নেতা মাষ্টার দিল মোহাম্মদ, মৌলবী আরেফ আহমদ, আনোয়ার শাহ সহ অনেকেই জানান, গত বছর আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনারা হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন শুরু করে। সেনাদের হাত থেকে বাঁচতে এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আর দুই দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী নো ম্যানস ল্যান্ডে অস্থায়ী তাঁবু করে বাস করছে প্রায় ছয় হাজার রোহিঙ্গা।
তারা আরো জানান, ১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকেই ওপারে মিয়ানমারের অতিরিক্ত সেনাবাহিনী, বিজিপি মোতায়েন রয়েছে।সেখান থেকে মাইক্রোফোনে প্রচার করা হচ্ছে ” আন্তর্জাতিক ভাবে শুন্য রেখায় বসবাস করা নিষিদ্ধ, তাই শুন্য রেখা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাও।না গেলে আইন সম্মত ভাবে বল প্রয়োগ করে তাড়ানো হবে”এমন প্রচারণা সকাল থেকেই করা হচ্ছে।যা গত ২০ দিন ধরে প্রচার করছে বলে রোহিঙ্গা নেতারা জানান।
মিয়ানমারের ওপারে মাইকিং এবং অতিরিক্ত স্বশস্ত্র সৈন্য – সেনা মোতায়েন করায় এপারেও বিজিবি সর্তক অবস্থানে রয়েছে। বাড়ানো হয়েছে টহল দল।
আশ্রিত রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় নো ম্যানস ল্যান্ডে থাকা অস্থায়ী তাঁবুগুলো থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে কাঁটাতারের বেড়ার অপর পাড়ে দাঁড়িয়ে মিয়ানমারের সেনারা রোহিঙ্গাদের হুমকি দিচ্ছিল। তারা ওই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য মাইকে ক্রমাগত হুশিয়ারি দিচ্ছিল।
রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বিডি২৪লাইভকে জানান, সেনাদের এই বার্তায় শিবিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন শান্তির সঙ্গে একটু ঘুমাতেও পারছি না। শিবিরের অনেক রোহিঙ্গা এখন পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে অন্তত ২ শতাধিক পরিবার প্রবেশ করেছে। কারণ জোর করে তাদের রাখাইনে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলে তারা আতঙ্ক বোধ করছিল।’
সীমান্তে থাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে:কর্ণেল মঞ্জুরুল হাসান জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমার কে পতাকা বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে,এখনো পর্যন্ত সাড়া পায়নি।
এদিকে মিয়ানমারের সেনারা প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ বার মাইকে রোহিঙ্গাদের ওই এলাকা ছাড়ার ঘোষণা দিচ্ছে। ওই ঘোষণায় বলা হচ্ছে, যে জমিতে তারা আছে এটা তাদের নয়, এলাকা না ছাড়লে তাদের আইনগত ভাবে বিচারের মুখোমুখি করে বল প্রয়োগ করবে।
সুত্র:-বিডি২৪লাইভ ডটকম।