তালাত মাহমুদ ছিলেন বহুমুখি প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব। সাহিত্যের প্রায় সব জায়গাতেই তার বিচরণ ছিল। তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান কবি, গীতিকার, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট ছিলেন। প্রেম ও সৌন্দর্যের পাশাপাশি তার কবিতায় উঠে এসেছে চেতনা, দ্রোহ ও মানবিকতা। তিনি সাংবাদিক ও সাহিত্যিকের পাশাপাশি একজন সফল সংগঠক ছিলেন। সেই সুবাদে তিনি শেরপুর ও জামালপুরের কবি-সাহিত্যিকদের সংঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন। একসময় রাজধানী ঢাকাসহ ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় সরব বিচরণ করলেও নাড়ির টানে চলে এসেছিলেন শেরপুরে। অথচ তার মতো একজন লেখক-সাংবাদিক ঢাকায় রয়ে গেলে আরও অনেক উচ্চাসনে বসতে পারতেন।
কাজেই তার মৃত্যুতে শেরপুর-জামালপুর অঞ্চলের সাহিত্য ও সাংবাদিকতা অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে-সদ্য প্রয়াত বিশিষ্ট সাংবাদিক-কলামিস্ট ও কবি তালাত মাহমুদ সম্পর্কে এমন কথা বলেছেন শেরপুর-জামালপুর অঞ্চলের বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিকগণ। শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকেলে কবি সংঘ বাংলাদেশের উদ্যোগে এবং গাংচিল সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ, চারুধ্বনি ছড়া পরিষদ, সাহিত্যলোক ও মহারশি সাহিত্য পরিষদের সহযোগিতায় শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ওই আয়োজিত এক স্মরণসভায় তার সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ওইসব কথা বলেন তারা।
কবি সংঘ বাংলাদেশের কার্যকরী সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধারের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কবি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আক্কাস। আলোচক ছিলেন কবি সংঘ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম তালুকদার, শেরপুর জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক সাজ্জাদুল করিম, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, সাহিত্যলোক সম্পাদক কবি আরিফ হাসান, গাংচিল সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি রফিক মজিদ, অধ্যাপক কবি মোস্তফা জিন্নাহ, অধ্যাপক কবি হাদিউল ইসলাম, কবি ও ছড়াকার মোস্তাফিজুল হক ও কবি হাফিজুর রহমান লাভলু।
কবি-ছাড়াকার আইয়ুব আকন্দ বিদ্যুতের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন কবি-লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, কবি রোজিনা তাসমিন, কবি-নাট্যকার শহিদুল ইসলাম, কবি জাহাঙ্গীর আলম, কবি সন্ধ্যা রায়, কবি আইরিন আহমেদ লিজা, জামালপুরের লেখক-সাংবাদিক শাহ জামাল, কবি আরিফুল ইসলাম লাভলু, সাংবাদিক শেখ ফরিদ, শেরপুরের কবি রাবিউল আলম, কবি আশরাফ আলী চারু, কবি মঞ্জুরুল হক, কবি নাসিম তালুকদার, কবি শামসুল হক শামীম, লেখক মিজানুর রহমান মিন্টু, কবি কামরুজ্জামান বাদল, কবি আজাদ সরকার, কবি হামিদা কায়সার, কবি সিনথিয়া শারমিন, কবি শাহিন শিমুল, কবি শাহিন খান, কবি শহিদুল ইসলাম ফকির, কবি হানজালা, কবি নুরুল ইসলাম নাযীফ, প্রয়াত কবি পুত্র তানসেন মাহমুদ ইলহাম প্রমুখ।
ওইসময় বক্তারা প্রয়াত তালাত মাহমুদের পাওনা টাকা উদ্ধার, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে অর্থিক সহায়তা প্রদান এবং তার অপ্রকাশিত সাহিত্য সৃষ্টি প্রকাশের পাশাপাশি তাকে নিয়ে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া স্মরণসভায় কবি সংঘ বাংলাদেশের কার্যকরী সভাপতি তার সম্পাদনায় প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল শ্যামলবাংলা২৪ডটকমের একাদশ বর্ষপূর্তিতে প্রয়াত তালাত মাহমুদসহ ৩ জনকে মরণোত্তর সম্মাননা প্রদানের ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে শেরপুর ও জামালপুর অঞ্চলের শতাধিক কবি-লেখকসহ স্থানীয় সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।