প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ রাজনীতি করতে চাইলে সুষ্ঠু রাজনীতি করুক, আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু সাধারণ মানুষের গায়ে হাত দিলে, তাদের রক্ষা নাই। এটা সহ্য করা যায় না। কোনো মানুষ সহ্য করতে পারবে না।
জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ: বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের খণ্ডচিত্র’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে রবিবার (৬ নভেম্বর) তিনি এ সব কথা বলেন। যারা ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারে ও কষ্ট দিতে পারে তাদের পাশে মানুষ কীভাবে দাঁড়ায় সেই প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না মানুষ আবার এদের পাশে কীভাবে দাঁড়ায়? কীভাবে সমর্থন করে?’
বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা চান না জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। দেশের উন্নতি ও মানুষের কল্যাণ চাই।’ দেশের প্রত্যেকটা মানুষের স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার আছে।
সরকার উৎখাতের নামে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অগ্নি সন্ত্রাস হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কীভাবে মানুষ মারে? একটা গাড়িতে যাচ্ছে জীবন্ত মানুষগুলো, সেখানে আগুন ধরিয়ে মানুষকে হত্যা করা। কীভাবে মানুষ পারে মানুষের ক্ষতি করতে? এটাই নাকি আন্দোলন! এই আন্দোলন তো আমরা কখনো দেখিনি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আন্দোলন, মানুষের অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে মানুষকে নিয়েই তো আন্দোলন করতে হয়। ২০১৩ সালে আন্দোলনের নাম বিএনপি মানুষ খুন করা শুরু করেছিল। প্রায় ৫০০ জন মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেছে এবং সাড়ে তিন হাজার মানুষ আহত হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা যতটুকু পারি করেছি। কিন্তু যে মানুষগুলো আপনজন হারিয়েছে, তাদের ব্যথা, কষ্ট ও বেদনাতো দুর করা সম্ভব না।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০১৩,১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট কর্মসূচির নামে আগুন সন্ত্রাস করেছিল দাবি করে, সেই সব ঘটনায় ভিডিওচিত্র তুলে ধরা হয়। পরে শেখ হাসিনা ওই সব ঘটনায় অগ্নি দগ্ধ ব্যক্তি ও নিহতদের সঙ্গে কথা বলেন। অনেক তাদের কষ্টকর কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় তাদের সমবেদনা জানান তিনি। অগ্নি সন্ত্রাসে নিহতদের পরিবারে পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি আহতের জন্য সাধ্যমতো কাজ করে যাবেন বলেও জানান শেখ হাসিনা।
সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন হতাহতদের পরিবারের সদস্য এবং পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে সামরিক আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর সদস্যের পরিবারের সদস্যরা। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা ছাড়াও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।