সাংবাদিকতা হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতার একটি দৈনন্দিন উপকরণ। এর মাধ্যমে দৈনিক চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা উপভোগ করা যায়। অন্য কোনো পেশায় সেই সুযোগ কম বলে মন্তব্য করেছেন দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শতবর্ষে আবুল মনসুর আহমদের সাংবাদিকতার প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, সাংবাদিকতার নাম করে দায়িত্বহীন মতামত, অসত্য তুলে ধরা এবং অন্যকে হেয় করে কথা বলাও এক ধরনের স্বাধীনতা, সেটি বিকৃত স্বাধীনতা। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সেই সমাজেই প্রতিষ্ঠিত হয় যেখানে একটা নৈতিক পরিবেশে মত প্রকাশ করা যায়। যেখানে কেউ মিথ্যা কথা বলবে না, অসত্য তথ্যকে খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরবে না, কাউকে হেয় পতিপন্ন করে কথা বলবে না। অর্থাৎ মতটা যেন খুব সুচিন্তিত, গবেষণাধর্মী ও তথ্যভিত্তিক মত প্রকাশ হয়। তাহলেই মত প্রকাশটা সমাজকে উন্নত স্তরে এবং এগিয়ে নিয়ে যায়। আমি প্রতিবেদন, মন্তব্য বা যা খুশি লিখব কিন্তু সেটা যেন দায়িত্বশীল মতামত, গবেষণা ও তথ্যভিত্তিক হয়।
অনুষ্ঠানে আবুল মনসুর আহমেদের জীবনী নিয়ে তিনি বলেন, আবুল মনসুর আহমেদ বাঙালি মুসলমানদের জন্য সবসময় চিন্তা করতেন। তিনি আদর্শিক জীবনযাপন করে গেছেন। শৈশবকাল থেকে আত্মসম্মানবোধের অধিকারী ছিলেন। আবুল মনসুর আহমেদ ছিলেন একাধারে সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ব্রিটিশ আমলে তিনি এ কে ফজলুল হক এবং সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ে তার অবদান অনস্বীকার্য। আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর বইয়ে তিনি রাজনীতির নানা বিষয়ে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, অর্থনীতিবিদ ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা, সমকালের প্ল্যানিং এডিটর ফারুক ওয়াসিফ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক তানভীর আহমেদ এবং আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক ইমরান মাহফুজ প্রমুখ। এছাড়া ওই বিভাগের অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুলের সঞ্চালনায় বিভিন্ন বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।