কোটা সংস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের অপেক্ষায় এখন সংসদের দিকে তাকিয়ে সবাই। আজ বুধবার (১১ এপ্রিল) বিকাল ৫টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হবে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ এ সরকারের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী কোটার ইস্যুতে প্রথমবারের মতো সরাসির কথা বলবেন। তার বক্তব্যের মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের আশা করছেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব আছে। সেখানে এই কোটা প্রসঙ্গ চলে আসতে পারে। সেখানে দেখুন প্রধানমন্ত্রী কী বলেন।’
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে আন্দোলন এখনও চলছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোটা সংস্কার নিয়ে সরাসরি কথা বলতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালে প্রতি বুধবার নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি এসময় এমপিদের তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বিভিন্ন এমপির সম্পূরক প্রশ্নেরও জবাব দেন। এই হিসেবে আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেবেন। লীগ ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায় সূত্রে জানা গেছে, আজ তিনি কোটা সংস্কার বা কোটা ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে পারেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক কোটা ইস্যুতে প্রশ্ন উত্থাপন করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন।
দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, বুধবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপ-কমিটির মিটিং শেষে এবং সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পরে ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। তাদের কথোপকথনে কোটা রাখা না রাখা বা সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে দিতে চান বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিষয়ে এর আগে দলীয় ফোরামে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে জাতীয় সংসদে এবারই প্রথমবারের মতো এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে যাচ্ছেন তিনি।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, ‘আজ প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্ব রয়েছে। এখানে যে কোনও এমপি যে কোনও বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রধানমন্ত্রী উত্তর দিতে পারেন। তিনি যেহেতু সমসাময়িক বিষয়ে কথা বলেন, সেই হিসেবে কোটা আন্দোলন নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। তিনি দেশের অভিভাবক। এই সংসদে তিনি সার্বিক দিক বিবেচনা করে নিশ্চয়ই এমন কোনও জবাব দেবেন যাতে আন্দোলনকারীসহ সবাই সন্তুষ্ট হবেন।’