ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা আনার এটাই শেষ সুযোগ। আরেকবার যদি আমাদের সন্তানরা রাস্তায় নামে, তাহলে কারো পিঠের চামড়া থাকবে না। সেটা আমি পুলিশ কমিশনারই হই, আর আপনি পরিবহন মালিক সমিতির বড় নেতাই হোন।‘
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, নতুন এ আইনের পর আমরা মালিক-শ্রমিক-পুলিশ মিলে যদি সড়কে শৃঙ্খলা আনতে না পারি, তাহলে সন্তানরা সম্মিলিতভাবে আমাদের রাস্তা থেকে তুলে দেবে। তখন রাস্তায় আপনিও নামতে পারবেন না, আমিও ডিউটি করতে পারব না। সহ্যের একটা সীমা থাকে। ধরুন আপনার একটা ভুল বা আমার একটা ত্রুটির কারণে এমন একজন মানুষ মারা গেল, যার বাসায় দুটি বাচ্চা রয়েছে এবং তাদের মুখে ভাত দেয়ার মতো কর্মক্ষম আর কেউ নেই। সেই মানুষটির কথা কি আমরা কেউ চিন্তা করি? অব্যাহতভাবে আমার সন্তান রক্তাক্ত হবে আর আমরা আনফিট গাড়ি নিয়ে, অদক্ষ চালক দিয়ে বছরের পর বছর গাড়ি চালিয়ে যাব। এটি মানুষ বেশি দিন সহ্য করবে না।
তিনি আরও বলেন, নতুন সড়ক-পরিবহন আইনটা করা হয়েছে সড়কে শৃঙ্খলা আনার জন্য। সরকার এবং ট্রাফিক পুলিশের জরিমানা আদায়ের উদ্দেশ্যে নয়। ঢাকা মহানগরীতে এখন প্রতি মাসে ৬-৭ কোটি টাকা জরিমানা করি। সরকারের কাছে এ টাকা একেবারেই নস্যি, সরকারের এ টাকার প্রয়োজনই নেই।
আমি কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর ট্রাফিকে যারা আছেন তাদের বলে দিয়েছি, মামলার কোনো টার্গেট নেই। সড়কে শৃঙ্খলা থাকলে মামলার প্রয়োজন নেই। মূল বিষয় হলো সবাই যদি আইনটা মেনে চলে, তাহলে মামলার প্রয়োজন নেই।
রেকারিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেখানে গাড়ি অচল, গাড়ি রেখে চালক বা মালিক কোথাও চলে গেছেন, দীর্ঘ সময় খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে রেকারিংয়ের কথা বলেছি। এর বাইরে যে গাড়ির কোনো কাগজই নেই, সেসব গাড়ি রেকারিংয়ের প্রয়োজন পড়ে।
বর্তমান নতুন আইনে একটি জরিমানা দিলে পরিবহন মালিক বা শ্রমিকের পুরো মাসের উপার্জন চলে যাবে। সুতরাং আমরা মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছি, অব্যাহতভাবে যারা আইন অমান্য করবে, আমরা শুধু তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করব। সেটাও সামান্য পরিমাণে প্রয়োগ করে কি অমান্য করেছেন এবং কেন করেছে বুঝিয়ে দেব। কিন্তু এটা একবার-দুইবার বলব, তৃতীয়বার বলব না। তখন আপনাকে জরিমানা করব।
তার বক্তব্যের আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বেলুন উড়িয়ে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষের উদ্বোধন করেন।