‘সখী ভালোবাসা কারে কয়…সে কি কেবলই যাতনাময়’—ভালোবাসা যাতনাময় হোক আর না হোক আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ঘড়িতে ১২ টা বাজবার সাথে সাথেই প্রিয়জনকে ভালোবাসার কথা জানান দেয়া শুরু হয়েছে। খানিক বাদে বাদেই বেজে উঠছে মেসেজ টোন, ফেসবুক ইনবক্সে জমা হচ্ছে ভালোবাসার পংক্তিমালা, ফেসবুক নিউজফিডে দেখা যাচ্ছে ভালোবাসা বহিঃপ্রকাশ। অনেকেই আগে থেকেই প্রিয় মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে রঙিন সাজে ঘরে বেড়াবার পরিকল্পনাও করে রেখেছেন। দিনটিকে ঘিরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও চলছে নানা আয়োজন। প্রিয়জনের সঙ্গে এ বন্ধন যেন অটুট থাকে সেই আশা নিয়ে, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে দিবসটি পালনের তোড়জোড়।
‘ভালোবাসা’, এর চেয়ে কোমল শব্দ আর কী হতে পারে! একটি মাত্র শব্দ, তাতে এত মধু! এত আবেগ! ভালোবাসা আছে বলেই মানুষ বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে। ভালোবাসা আছে বলেই মানুষ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে ওঠে।
আজ ফাগুনের ছোঁয়া লেগেছে তরুণ-তরুণীদের মনে। প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে তরুণীরা সেজেছেন নানা রঙে। পরনে শাড়ি, মাথায় রঙিন ফুলের মুকুট, গলায় মালা, হাতে-খোঁপায় ফুল; তরুণদের গায়ে পাঞ্জাবি। কেউ কেউ মুখে এঁকেছেন আলপনা। মুখে হাসি, চলনে উচ্ছ্বাস। এভাবেই দলে দলে তরুণ-তরুণী, কপোত-কপোতীরা হাতে হাত রেখে সারা দিন ঘুরে বেড়াবেন।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে প্রতিবারের মত শেরপুর শহরের প্রতিটি মোড়ে ভ্রাম্যমান মৌসুমী ফুল বিক্রেতা শহরের তরুণ তরুণীদের ফুলের চাহিদা মেটাবেন। প্রতিবারের মতো ভালোবাসা দিবসে সব বয়সীদের ভীড় জমবে শেরপুর সদরের অর্কিড পর্যটন প্রকল্প, পাহাড়ে ঘেরা গজনী অবকাশ, মধুটিলা ইকোপার্ক ও রাজার পাহাড়ে। ছোট ছোট কফিশপগুলো হয়ে ওঠবে তরুণ-তরুণীদের প্রাণকেন্দ্র।
ফুলে ফুলে সাজবে ভালোবাসার মন। মালাবদলও হয় এমন দিনে। অনলাইন, মোবাইল, ক্ষুদেবার্তায় ভালোবাসার রূপ ফুটে উঠবে। গোলাপের পাপড়ি দিয়ে নতুবা লিপস্টিক মাখা চুমোর চিত্র প্রেমচিঠিতে মেখে পাঠাবে প্রিয়তমার কাছে। আর নানা আকর্ষণীয় উপহার-সামগ্রী দিয়ে মন জয় করতে প্রেমচিঠি পাঠাবে প্রিয়তমার কাছে।
আবার অনেকেই “আঙুর ফল টক” ভেবে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবে। অনেকেই বন্ধুদের নিয়ে আড্ডায় মাতবে নিউমার্কেট কফি হাউজ ও পৌরপার্কের খোলা মাঠে।
পুব আকাশে সূর্য উঁকি দিতে না দিতেই ইট-পাথরের শহুরে জীবন থেকে মুক্তি নিতে সবাই ছুটে যাবে প্রকৃতির সন্ধানে। কে কাকে আগে ভালোবাসার কথা জানাবে অথবা প্রিয় মানুষটিকে আবারও আজ বলবে ‘ভালোবাসি’—তারই যেন প্রতিযোগিতা চলবে আরেকটা বার। ফুল হাতে নতুন সাজে সাজবে প্র্রিয় শহর শেরপুর।
আজকের দিনটাই শুধু ভালোবাসার। এ ভালোবাসা যেন কখনো ফুরাবার নয়। তাই সবাই মুখিয়ে রয়েছেন এই ভালোবাসা দিবস উদযাপনে। আজকের দিনে এত ভালোবাসার মাঝে নিজ জীবন, পরিবার এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা আরেকটাবার জাগিয়ে উঠবে এই হোক সবার প্রত্যাশা।