ক্রিকেট জুয়ার সংবাদ প্রকাশের জের ধরে শেরপুরের নকলায় বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়েছেন শেরপুর ইয়্যুথ রিপোর্টার্স ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সাংবাদিক শফিউল আলম লাভলু (৩২)। ১ মে মঙ্গলবার রাতে নকলা শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় চরকৈয়া এলাকার রাস্তায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় বুধবার লাভলুর ছোটভাই শরিফ হাসান বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামী করে নকলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে এ ঘটনায় শেরপুর ইয়্যুথ রিপোর্টার্স ক্লাব আজ বুধবার সন্ধ্যায় নিউ মার্কেটস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরী সভার আহবান করে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে শেরপুর ইয়্যুথ রিপোর্টার্স ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাংবাদিক শফিউল আলম লাভলুর উপর বর্বোচিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন ।তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি, দৈনিক সবুজ পত্রিকার নকলা উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘শেরপুর প্রতিদিন’র বার্তা সম্পাদক শফিউল আলম লাভলু মঙ্গলবার ‘আইপিএল জুয়ায় নিঃস্ব হচ্ছে নকলার যুব সমাজ’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী খবর লেখে। ওই খবরে রুষ্ট হয় আইপিল জুয়ার সাথে জড়িত স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র।
এরই জের ধরে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নকলা শহর থেকে মোটরসাইকেলযোগে স্থানীয় চরকৈয়া এলাকার বাড়ি ফেরার পথে আইপিএল জুয়াড়িদের হামলাসহ ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি। ওইসময় হামলাকারীরা সাংবাদিক লাভলুর সাথে থাকা স্যামসাং নোট-৩ মডেলের মোবাইল ফোন, নগদ টাকাসহ মানিব্যাগ, সোনার আংটি, সাংবাদিকতার পরিচয়পত্র, এটিএম কার্ড ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজ-পত্র ছিনিয়ে নেয়। তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা দ্রুত সটকে পড়ে।
পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। হাতে-পায়েসহ শরীরজুড়ে ক্ষত নিয়ে তিনি এখনও ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা আপাতত শঙ্কামুক্ত হলেও সুস্থ হতে বেশ কিছু সময় লাগতে পারে।
এদিকে এ ঘটনায় শেরপুর ইয়্যুথ রিপোর্টার্স ক্লাব আজ বুধবার সন্ধ্যায় নিউ মার্কেটস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরী সভার আহবান করে।সভায় সর্বসম্মতিক্রমে শেরপুর ইয়্যুথ রিপোর্টার্স ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাংবাদিক শফিউল আলম লাভলুর উপর বর্বোচিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সেইসাথে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের প্রতি উদ্বাত্ত আহবান জানানো হয়।
এছাড়া তার উপর হামলার ঘটনায় সঠিক বিচার বঞ্চিত হলে শেরপুর ইয়্যুথ রিপোর্টার্স ক্লাবসহ জেলায় কর্মরর্ত সাংবাদিকদের নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিসহ বৃহত্তর কর্মসুচি দেওয়ার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
এদিকে একই ঘটনায় শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার ও সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, জেলা সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুগনিউর রহমান মনি পৃথক পৃথক ভাবে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন ।
এ ব্যাপারে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, সাংবাদিক লাভলুর উপর হামলার বিষয়ে নিয়মিত মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।