নেত্রকোনার মদনে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষে যৌন হয়রানি করায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে নুরুল আমীন আজাদ নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিভাবক মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এ অভিযোগটি দায়ের করেছেন।
অভিযোগ পেয়েই তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউএনও লুৎফর রহমান বিদ্যালয়ে ছুটে যান এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত নুরুল আমীন আজাদ উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর তহুরা আমিন (টি আমিন) সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
লিখিত অভিযোগ ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক নুরুল আমিন আজাদ ইংরেজি পাঠদান দিতে নবম শ্রেণির কক্ষে যান। শিক্ষার্থীদের কাছে ইংরেজি বই না পেয়ে ক্ষিপ্ত হন তিনি। বই না থাকার শাস্তি হিসেবে একজন শিক্ষার্থীকে অপর শিক্ষার্থীর পিঠে থাপ্পড় দেওয়ার আদেশ দেন তিনি। শিক্ষকের আদেশ পেয়ে ছেলে শিক্ষার্থী ছেলেদের এবং মেয়ে শিক্ষার্থী মেয়েদের একে ওপরের পিঠে থাপ্পড় দেয়। কিন্তু ছাত্রীদের শরীরে শিক্ষক নিজে হাত দেন। এতে ছাত্রীরা লজ্জাবোধ করে শ্রেণিকক্ষে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
পরে বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তাদের অভিভাবকদের জানায়। বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর মঙ্গলবার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি একেএম লুৎফর রহমান। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষককে পাঠদান থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, স্যার প্রায় সময়েই আমাদের সঙ্গে ইভটিজিংমূলক কথা বলেন। সোমবার আমাদের কাছে ইংরেজি বই না থাকায় শাস্তি হিসেবে একজন আরেক জনকে থাপ্পড় দিতে বলেন। কিন্তু স্যার কয়েকজন ছাত্রীর শরীরে হাত দিয়ে অশালীন কথা বলেন। স্যারের এমন আচরণে আমরা খুবই লজ্জিত।
অভিযুক্ত শিক্ষক নুরুল আমীন আজাদ বলেন, ইংরেজি বই না থাকায় আমি তাদের শাস্তি হিসেবে একে অপরকে থাপ্পড় দিতে বলেছি। আমি ভালোবেসে আদর করে ছাত্রীর শরীরে হাত দিয়েছি। এখন ছাত্রীরা বিষয়টি ভিন্নভাবে নিয়েছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রউফ বলেন, বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে আন্দোলন করতে চাইছে। কিন্তু তাদের বুঝিয়ে থামিয়ে রাখছি। ইউএনও স্যার বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি স্যার ব্যবস্থা নেবেন।
জাহাঙ্গীরপুর তহুরা আমনি (টি আমিন) সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম লুৎফর রহমান বলেন, অভিযোগটি পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ে যাই। নবম শ্রেণির ১০ জন শিক্ষার্থীর বক্তব্য শুনেছি। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
#যুগান্তর