শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার দু’টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দু’টি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। নির্বাচনে ভোট ডাকাতি, কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে পরাজিত ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর দায়ের করা দু’টি পৃথক মামলার রায়ে ১২ জুন মঙ্গলবার সিনিয়র সহকারী জজ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম ওই নির্দেশ দেন। কেন্দ্র দু’টি হলো উপজেলার শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের নয়আনী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের মাদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ শ্রীবরদী সদর ও খড়িয়া কাজিরচর ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শ্রীবরদী সদর ইউপির নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ আব্দুল হালিম বিজয়ী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আকরাম হোসেন মন্টু পরাজিত হন। অপরদিকে খড়িয়া কাজিরচর ইউপির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এ ডি এম শহিদুল ইসলাম বিজয়ী এবং বিএনপি প্রার্থী মো. শাহজাহান পরাজিত হন। নির্বাচনে ওই দুই পরাজিত প্রার্থী বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ২৬ মে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দু’টি পৃথক মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বিবাদী করা হয়।
মামলায় শ্রীবরদী সদর ইউপির পরাজিত প্রার্থী আকরাম হোসেন মন্টু অভিযোগ করেন, নয়আনী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল হালিমের পক্ষে ভোট ডাকাতি, কারচুপি, বিভিন্ন অনিয়ম ও তার (আকরাম) একজন নির্বাচনী এজেন্টকে অপহরণ করা হয়েছিল। এই কেন্দ্র ছাড়া অন্য ৮টি কেন্দ্রে আকরাম ৭১৬ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। এই কেন্দ্রে ১ হাজার ৪৫৩ ভোটের মধ্যে ১ হাজার ৪২২ ভোট প্রদান দেখানো হয়। ভোটার অনুপস্থিত ছিলেন মাত্র ৩১ জন। আর ভোট প্রদানের হার শতকরা ৯৮ ভাগ, যা অস্বাভাবিক। অথচ ওই কেন্দ্রের মৃত ও প্রবাসীসহ বিভিন্ন দায়িত্বের কারণে অনুপস্থিত ভোটারের সংখ্যাই ছিল শতাধিক। অর্থাৎ কারচুপি ও অনিয়মের মাধ্যমে আব্দুল হালিম বিজয়ী হয়েছিলেন।
অপরদিকে খড়িয়া কাজিরচর ইউপির পরাজিত প্রার্থী মো. শাহজাহান অভিযোগ করেন, মাদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ৬৭ ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ৯শ ভোট প্রদান দেখানো হয়। ভোট প্রদানের হার শতকরা ৯২ ভাগ, যা অস্বাভাবিক। এই কেন্দ্র ছাড়া অন্য ৮টি কেন্দ্রে ভোট প্রদানের হার ছিল শতকরা ৭৫ ভাগ। এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে অনিয়মের ব্যাপারে আদালতের নিকট ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণশেষে ট্রাইব্যুনাল ওই দু’টি কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন। বাদী পক্ষে এডভোকেট খন্দকার মাহবুবুল আলম রকীব ও বিবাদী পক্ষে এডভোকেট নূরুল ইসলাম মামলা দু’টি পরিচালনা করেন।