শ্রীবরদীর সীমান্তবর্তী রানিশিমুল ইউনিয়নের হালুহাটি গ্রামে বন্য হাতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে ৭০-৮০টি বন্য হাতির দল হালুহাটি গ্রামবাসির বাড়িঘরে হামলা করে ও বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে এবং বাড়িতে থাকা ধান, চাউল ও অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী খেয়ে সাবার করে।
এসময় বন্য হাতি লোকজনের বাড়িতে থাকা রাসায়নিক সার ইউরিয়া খেয়ে হাতিরটির মৃত্যু হয়েছে এমন ধারনা স্থানীয়দের।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, শুক্রবার গভীর রাতে ৭০-৮০টি খাদ্যের সন্ধ্যানে হালুহাটি গ্রামে লোকজনের বাড়িতে আসে। এসময় হাতির পাল খাদ্য না পেয়ে বসত বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে। ওই গ্রামের লোকজনের ঘরে থাকা বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী ও রাসায়নিক সার ইউরিয়া খেয়ে সাবার করে।
ইউরিয়া সার খাওয়ায় একটি হাতি বিষক্রিয়ায় রাতেই মারা যায়। ক্ষতিগ্রস্থ হালুয়াহাটি গ্রামের আবু সামার স্ত্রী ফজলি বেগম বলেন, হাতির তান্ডবের কারণে আমরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি, আজ সকালে এসে দেখি ঘর-বাড়ি ভাংচুর করে ঘরের ভিতরে থাকা ধান, চাউল ও ইউরিয়া সার খেয়ে ফেলেছে।
একই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ বেঙ্গুয়া ওরফে বেঙ্গু বলেন, হাতির অত্যাচারে কয়েকদিন থেকে বসত বাড়ি ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করছি। হঠাৎ গত রাতে আমার চারটি বসত ঘরসহ সর্ম্পূণ বাড়িটি তছনছ করে। শ্রীবরদী উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের ভেটেরেনারী সার্জন ডাঃ মেহেদি হাসান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হাতিটি ইউরিয়া সার খাওয়ার কারণে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদা নাছরিন, শেরপুর জেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য মিসেস কহিনুর আক্তার তালুকদার, বালিজুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম ও শ্রীরবদী থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অপরদিকে হাতির মৃত্যুর কারণে বন্য হাতির তান্ডব আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসি। এনিয়ে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। দ্রুত বন্য হাতির কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছেন এলাকাবাসি।
উল্লেখ্য উপজেলার রাণীশিমূল ইউনিয়নের হালুয়াহাটি গ্রামে গত ১০ আগষ্ট থেকে খাদ্যের সন্ধ্যানে ৭০-৮০টি হাতির একটি
ভারত থেকে নেমে আসে এবং গ্রামবাসির সবজির ক্ষেত, খামার ও বসত বাড়িতে তান্ডব চালাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে হালুহাটি গ্রামের চুনু মন্ডলের ছেলে আ: হাই ওরফে নান্ডুু শেখ হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত হয়। নিহত নান্ডু শেখের স্ত্রী ও পুত্র বর্তমানে শেরপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।