শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার তিন ইউনিয়নের লোকের সমন্বয়ে এক গ্রাম পানি বন্দি। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে- রাণীশিমুল, কাকিলাকুড়া ও সিংগাবরুনা। এ গ্রামের নাম চেংগুর তাইর। প্রায় সহস্রাধিক লোকের বাস এ গ্রামে। গ্রামের সিংহ ভাগ লোকই দিন মজুর। কিছু সংখ্যক কৃষক। বর্ষা মৌসুমে এ গ্রামের লোকদের কষ্টের সীমা থাকে না। বর্ষা মৌসুমের সময়টাতে প্রায় সময় পানি বন্দি হয়ে থাকে এ গ্রামের লোকজন। তাছাড়া এ গ্রামে প্রবেশের নেই কোন রাস্তা। এযেন অবহেলিত এক জনপদ। নির্বাচনের সময় অনেকেই প্রতিশ্রæতি দেয় নির্বাচিত হলে এ গ্রামের জন্য রাস্তাঘাট করে দেব। নির্বাচিত হলে আর কোন খবর থাকে না। এভাবেই যুগ যুগ ধরে অবহেলিতই এ গ্রাম। গ্রামে নেই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে গ্রামের অধিকাংশ লোকই অশিক্ষিত। কেউ অসুস্থ্য হলে রাস্তা না থাকায় চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরতে হয়। কোন গর্ভবতী মা অসুস্থ্য হলে অনেক সময় বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। গ্রামে রাস্তা না থাকায় এ গ্রামের ছেলে মেয়েদের কেহ বিবাহ দিতে চায় না।
টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে এ গ্রাম। গ্রামের চতুর্দিকে থৈ থৈ করছে বন্যার পানি। বর্তমানে এ গ্রামের লোকজনের কষ্টের অন্ত নেই। ঘর থেকে কোথাও যেতে হলে নৌকা ছাড়া কোন উপায় নাই। দিন মজুর শ্রেণির লোকজন অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছেন। গ্রামের লোকদের খাদ্য সংগ্রহ ও হাট-বাজারে যেতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এছাড়া, গবাদী পশু ও হাঁস-মুরগীর খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারন করেছে। এ গ্রামের মোস্তাকিন, আলী, হোসেন, মজিদ, সাদা, মিষ্টার ও খালেক জানান, যুগ যুগ ধরে আমরা অবহেলিত। আমাদের গ্রামে রাস্তা না থাকায় যাতায়াত করতে ও উৎপাদিত ফসল বাজারে বিক্রি করতে অনেক কষ্ট হয়। এছাড়া, গ্রামে কোন বিদ্যালয় না থাকায় অধিকাংশ লোক অশিক্ষিত।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম রিপন ফকির জানান, বন্যার ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করবো। আর রাস্তা নিয়ে একটু সমস্যা আছে। পাকা রাস্তা থেকে ১০০/১৫০ ফুট জমি হাসধরা গ্রামের ফকিরের। সে জমি দিতে নারাজ। ফকির জমি দিলে সামনে চল্লিশ দিনের প্রকল্পের কর্মসুচিতে রাস্তার কাজ করে দেওয়া হবে। রাণীশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানাকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায় নাই।