জেলার শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী বন্য হাতিকবলিত সিংগাবরুনা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার নাম করে সাধারন গ্রাহকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দালালদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগি প্রতারিত গ্রাহকরা। এনিয়ে দালালদের হুমকিতে দিন কাটছে ভুক্তভোগিদের।
অভিযোগ সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী চান্দাপাড়া, বাবেলাকোনা, হারিয়াকোনা ও মণিকোনা গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নাম করে আদিবাসি উচ্চ বিদ্যালয়ের দুলাল মাস্টার, মেঘাদল বাজারের মুদি দোকানী নুর জামাল মিটার প্রতি ৭ হাজার ২ শত টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে। ৩/৪ বছরেও বিদ্যুৎ সংযোগ না পেয়ে চান্দাপাড়া গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে আক্তার হোসেন বাদী হয়ে ৫ ডিসেম্বর পুলিশ সুপার শেরপুর ও শ্রীবরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযুক্তরা হলো, মেঘাদল বাজারের নুর ইসলামের ছেলে নুর জামাল (৫৫), মাটিফাটা গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে দুলাল মাস্টার (৪০) ও বাবেলাকোনা গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে মোতালেব (৩৫)।
এনিয়ে ৩০ নভেম্বর শেরপুর টাইমসসহ একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর দালাল চক্রের টনক নড়ে। পরে ওই পর দিন থেকেই ৬০টি মিটার লাগায় এবং সেই সাথে নতুন করে আরো টাকা দাবী করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চান্দাপাড়া গ্রামের নুরুজ্জামান, ইসমাইল, তাসলিমা, মাজেদ, রেজিয়া খাতুন, জেনুার হোসেন ও মিজানুর রহমান জানান,কিছু কিছু মিটার লাগালেও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় নাই। এছাড়া, আমাদের কাছ থেকে যে ৭ হাজার ২ শত নিয়েছে এ টাকা ফেরত দেয় নাই এবং নতুন করে আরোও টাকা দাবী করছে। এছাড়া, ওই দালালরা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
অভিযুক্ত দুলাল মাস্টার জানান, আমি যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলাম তাদের মিটার লাগিয়ে দিয়েছি । শুধু আমি না অনেকেই টাকা নিছে এবং শেরপুরের আলমগীর নামে ঠিকাদারের এক লোকের কাছে জমা দিছে।
আরেক অভিযুক্ত নূর জামাল বলেন, আমি ওয়ারিং করার মাল দিছি তাই প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে একহাজার টাকা করে নিছি। বাকী টাকা শেরপুরের আলমগীর নিছে। তারে ধরেন।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমীন তালুকদার জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করার জন্য ইতিমধ্যেই অফিসার পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই এলাকার লাইন নির্মান কাজের দ্বায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের শেরপুর-জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আহাম্মেদ জানান, আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
শেরপুর পল্লীবিদ্যু সমিতির জিএম মাসরুল হক খান জানান, বিষয়টি আমার গণমাধ্যমের সুবাধে নজরে এসেছে। থানায় যেহেতু অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সংগত কারণেই প্রশাসন থেকে আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতা করবো এই দালাল চক্রের শাস্তির ব্যপারে।