শেরপুরের শ্রীবরদীতে তাঁতী দলের ১৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক রুবেল লিখিত বক্তব্যে বলেন, এমন অন্যায় ভাবে যদি মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয় শেরপুরের সাধারণ জনগণ ও সকল নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পাল্টা কর্মসূচী দেওয়া হবে। এতে করে যদি শান্ত শেরপুর অশান্ত হয়ে উঠে এর সকল দায়ভার পুলিশ বিভাগকেই নিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে শহরের রঘুনাথবাজার এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন , দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি,নজিরবিহীন লোডশেডিং, জ্বালানি সংকট, সীমাহীন লুটপাট, অর্থপাচার, নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশ যখন প্রতিবাদমুখর, তখন অবৈধ সরকার জোরপূর্বক ক্ষমতায় থাকতে বেসামাল ও দিশেহারা হয়ে উঠেছে।
বিগত ২০১৮ সালের ন্যায় আবারও কাল্পনিক মামলা দেওয়া ও বিনা গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন শুরু করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিনা উসকানিতে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা তাঁতীদলের কর্মীসভা শেষে শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফেরার পথে আকস্মিক হামলা চালিয়ে ১৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে গায়েবী জেলা হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০/৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে ১৯০৮ সনের বিস্ফোরক দ্রব্যাদী আইনের ৩/৪ ধারা এবং পেনাল কোড এর ১৪৩/১৮৬/৩৩২/৩৫৩/৫০৬(২)/৩৪ ধারায় মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওই মামলায় হাস্যকরভাবে দুই বছর যাবত পঙ্গু শয্যাশায়ী মোঃ সামসুজ্জামান স্বপনকে ২৮ নং আসামি এবং শেরপুর সদরের গাজীরখামার ইউনিয়ন ও পাকুড়িয়া ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের নামেও ২০১৮ সালের ন্যায় মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়া মামলায় রাজু নামে সিলেটে কর্মরত এক সরকারি চাকুরিজীবীকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং আটককৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলাম, সহসভাপতি এ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান জীবন, শ্রীবরদী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন দুলালসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
তবে শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, শুক্রবার শ্রীবরদী পৌর তাঁতী দল আয়োজিত কর্মী সমাবেশে যাওয়ার পথে উগ্র ও রাষ্ট্রদ্রোহী বিভিন্ন স্লোগান দেয় নেতাকর্মীরা। পরে সমাবেশ থেকে ফেরার পথে নেতাকর্মীরা আবারো নানা স্লোগান ও পুলিশের সাথে উচ্ছঙ্খৃল আচরণ করে। এসময় তাদেরকে থামাতে চেষ্টা করে পুলিশ।
এতে নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণ করলে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দুইটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।